সিপ্লাস ডেস্ক: ২০১৩ ও ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের জেরে ঢাকার পল্টন ও চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় দায়ের করা পৃথক পাঁচটি মামলায় হেফাজত নেতা মামুনুল হকের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
জামিন সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে রুল মঞ্জুর করে বুধবার (৩ মে)হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তার জামিনের আদেশ দেন।
আদালতে মামুনুলের জামিনের আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান।
এ বিষয়ে মামুনুল হকের আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা বলেন, এসব মামলায় এজাহারে তার নাম নেই। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও নেই। দুই বছর ধরে তিনি কারাবন্দি। এসব যুক্তি তুলে ধরার পর হাইকোর্ট ৫ মামলায় জামিন মঞ্জুর করেছেন।
তিনি জানান, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে প্রায় ৪১টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে নিম্ন আদালতে ১৩ টি মামলায় জামিন পেয়েছেন। আর আজ হাইকোর্টে ৫ টিতে জামিন পেলেন।
২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে হেফাজতে ইসলামের আলোচিত নেতা মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন মামুনুল হকের দাবি করা দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণা।
২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানাধীন রয়েল রিসোর্টে জান্নাত আরা ঝর্ণাসহ মামুনুল হককে আটক করে স্থানীয় লোকজন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হলে ঝর্ণাকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে দাবি করেন মামুনুল।
এরপর ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফর ঘিরে সহিংসতা ও রিসোর্টকাণ্ডে রাজধানীর পল্টন থানা ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় দুটি মামলা হয় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে।
বুধবার যেসব মামলায় জামিন পেয়েছেন মামুনুল হক সেগুলো হলো, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফর ঘিরে হাটহাজারীতে সহিংসতার ঘটনায় ২০২১ সালের ২৬ মার্চের নাশকতার মামলা, ২৯ মার্চ রাজধানীর পল্টন থানার মামলা, ২৬ মার্চ পল্টন থানার মামলা এবং ২০১৩ সালের মে মাসে রাজধানীর হেফাজতের মহাসমাবেশের সহিংসতার ঘটনায় পল্টন থানায় ওই বছরের ৫ এবং ৬ মে-এর মামলা।
২০২১ সালের ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ করে হেফাজতে ইসলাম। মোদীর বিরোধিতায় প্রথমে ঢাকায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে বিক্ষোভে সহিংসতা হয়, তার জেরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাণঘাতী সংঘাত হয়। যার জেরে ২৮ মার্চ হরতাল ডাকে হেফাজত, ওই হরতালকে ঘিরে চরম নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হয় সারাদেশে।