বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (ইইই) দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারসহ ১০ দফা দাবি আজ শুক্রবার দুপুর ২টার মধ্যে মেনে না নিলে বুয়েটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
আবরার হত্যার বিচারে বুয়েট ক্যাম্পাসে বৃহস্পতিবার চতুর্থ দিনের মতো বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
চলমান এই আন্দোলনে সংহতি জানানো বুয়েট শিক্ষক সমিতিও তাদের সাত দফা দাবি নিয়ে এদিন ক্যাম্পাসে ছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরাও পদযাত্রার মাধ্যমে ছিলেন সরব। এই কর্মসূচিতে অংশ নেন ডাকসু ভিপি নুর। আর বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শোকর্যালি বের করে।
এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন শিক্ষপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আবরার হত্যার বিচারের দাবিতেও নিজ নিজ ক্যাম্পাসে ছিলেন সোচ্চার। এদিকে আজ বিকেল ৫টায় বুয়েট উপাচার্য ড. সাইফুল ইসলাম আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে জানিয়েছেন ছাত্র-কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান।
বুয়েট শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি শুরু হয়। শুক্রবার দুপুর ২টা পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া সময়ের বিষয়টি উল্লেখ করে বুয়েট প্রশাসনকে ফের হুঁশিয়ার করেন শিক্ষার্থীরা।
তারা বলেন, পূর্বঘোষিত ১০ দফা দাবি না মানলে বুয়েটের সব ভবনে তালা দেওয়া হবে। দাবিগুলো হলো– আবরার হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি, সিসিটিভি ফুটেজে শনাক্ত হওয়া হত্যায় জড়িতদের বুয়েট থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার, আবরারের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার, অবিলম্বে অভিযোগপত্র দেওয়া, ১৫ অক্টোবরের মধ্যে বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ, উপাচার্যের দায়িত্বে অবহেলার জবাবদিহি, পূর্বেও এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বহিষ্কার, সিসিটিভি বাড়ানো, শেরেবাংলা হল প্রভোস্টকে পদত্যাগ বা প্রত্যাহার।
আবরারকে রুম থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা বৃহস্পতিবারের কর্মসূচিতে কয়েক শিক্ষার্থী পথনাটকের মাধ্যমে তুলে ধরেন। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এদিনের মতো কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন, শুক্রবার (আজ) বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা জানাতে বিকেল ৩টায় বুয়েটের প্রধান ফটকে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক সমিতির নেতারা। এ সময় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক একেএম মাসুদ উপাচার্যের পদত্যাগসহ সমিতির সাত দফা দাবি উল্লেখ করেন।
মাসুদ বলেন, ‘এমন একটা ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড দেশবাসী মেনে নেবে না। সবচেয়ে মেধাবী ছাত্র এখানে ভর্তি হয়। এ রকম বর্বর হত্যাকাণ্ড আমাদের হৃদয় ভেঙেছে। আমি স্বাভাবিক থাকতে পারছি না। আবরারের সহপাঠীরা পারবে কীভাবে।’