হাটহাজারী প্রতিনিধি: হাটহাজারীতে সড়কে মৃত্যুর মিছিল যেন থামছেই না। নতুন বছরের শুরু থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দশ জনের তরতাজা জীবন থেমে গেছে সড়ক দুর্ঘটনায়।
চলতি বছরের শুরু থেকেই হাটহাজারী অংশের চট্টগ্রাম-নাজিরহাট মহাসড়ক কিংবা চট্টগ্রাম-রাউজানের কোন না কোন অংশে লাশ ঝড়ে পড়ছে। ভারী হচ্ছে লাশের সংখ্যা। অপরদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নেয়নি কোন পদক্ষেপ। পরিসংখ্যানে জানা গেছে, শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৬ টার দিকে একই সড়কের নন্দীরহাট ধোপারদিঘীর পাড় এলাকায় ট্রাক ও নসিমনের মুখোমুখি সংঘর্ষে নসিমনের চালক আকরাম শেখ (২৭) ঘটনাস্থলে মারা যায়। ২২ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) দিবাগত রাত ১ টার দিকে চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়ক ইছাপুর এলাকায় ট্রাক ও সিএনজি অটোরিকশার সংঘর্ষে সিএনজি চালক আবু তৈয়্যব (৪৫) মারা যান। ২০ ফেব্রুয়ারি হাটহাজারী-নাজিরহাট সড়ক চারিয়া বোর্ড স্কুল সংলগ্ন এলাকায় সিএনজি অটোরিকশা ও ট্রাকের সংঘর্ষে মারা যান সুজন কুমার দেব (৫৩) নামে সিএনজি যাত্রী । ১২ ফেব্রুয়ারি রাত ১১ টার দিকে হাটহাজারী-অক্সিজেন সড়ক ফতেপুর চবি ২ নং গেইট এলাকায় অজ্ঞাত গাড়ির ধাক্কায় মারা যান শামসুল আলম (৬৫) নামে এক পথচারী। ১লা ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টার দিকে হাটহাজারী-নাজিরহাট সড়ক মিরেরহাট সংলগ্ন বড়ুয়াপাড়া এলাকায় কার ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে মারা যান মো. রফিক (৬০) নামে এক বৃদ্ধ । ২৯ জানুয়ারি হাটহাজারী-নাজিরহাট সড়ক কাটিরহাট এলাকায় বাসের ধাক্কায় খদিজা বেগম(৫০) নামে এক নারী মারা যান। ২৩ জানুয়ারি হাটহাজারী-নাজিরহাট সড়ক মুছারদোকান সংলগ্ন এলাকায় অজ্ঞাত গাড়ির ধাক্কায় অসিম বড়ুয়া প্রকাশ গণেশ (৫০) নামে এক অটোরিকশা চালক মারা যায়।
১৭ জানুয়ারি উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের সরকারহাট বাজারের পশ্চিমে সফর আলি সড়কের রেললাইন এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী সাথি আক্তার (২২) নামে এক তরুণী মারা যান। ১২ জানুয়ারি রাত আটটার দিকে হাটহাজারী পৌরসভা হাটহাজারী-নাজিরহাট সড়ক কালিবাড়ি এলাকায় পিকআপ-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে মো. রাশেদ (১৭) নামে মোটরসাইকেল আরোহী মারা যায়।এদিকে সড়কে মৃত্যু বন্ধে যথাযথ কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় হতাহতের পরিবারসহ সচেতন মহল ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, সড়ক উন্নয়ন হলেও চালকদের মনের উন্নয়ন হয়নি। কোন সময়ে কিভাবে গাড়ি পরিচালনা করবে এ বিষয়ে চালকরা উদাসীন। নখের দর্পনের মত সড়ক পেয়ে তারা ভুলে যায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের কথা। সড়ক ফাঁকা হোক কিংবা ব্যস্ততম হোক তাতে তাদের মাথাব্যথা নেই। দ্বিতীয়ত দুর্ঘটনার পর যে কোনভাবে মালিকপক্ষ তাদের রক্ষা করে নিবে এ মনোভাবে তারা গাড়ি ইচ্ছেমত পরিচালনা করে।
তাই এ চিন্তাধারা থেকে মুক্ত দ্বিতীয়ত মালিকপক্ষের কড়া নির্দেশনা এবং দৃশ্যমান শাস্তির ব্যবস্থা না করলে দিন দিন সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। লাশের মিছিল দিন দিন ভারী হলেও কারো থাকবেনা কোন মাথাব্যথা। বছরে একদিন নিরাপদ সড়ক চাই নামে বিভিন্ন সংঘটন আনন্দ সংগ্রাম করলেও ফলপ্রসূ হবে জিরো। অপরদিকে পথচারীদেরও সড়ক পারাপারে সতর্ক হতে হবে।