সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপো বিস্ফোরণের ঘটনায় আরো এক ফায়ার সার্ভিসের সদস্য চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
রবিবার (১২ জুন) ভোরে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে সীতাকুণ্ড বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে হলো ৪৭ জন।
নিহত ওই ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সদস্যের নাম গাউসুল আজম (২২)। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তাঁর মৃত্যু হয়।
তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এস, এম, আইউব হোসেন।
তিনি জানান, গাউসুলের শরীরে ৭০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। সঙ্গে তাঁর শ্বাসনালি পুড়ে গিয়েছিল। চট্টগ্রাম থেকে হেলিকপ্টারে করে ঘটনার পরদিন তাকেসহ ৭ জনকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। ওই দিনই তাকে ভর্তি করা হয় আইসিইউতে। পরবর্তীতে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে দেওয়া হয় লাইফ সাপোর্ট। মাঝে কিছুটা উন্নতি হলে লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়। কিন্তু সর্বশেষ তাঁর অবস্থার আবার অবনতি হলে তাকে আবারও লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
গাউসুলের ফুপাতো ভাই কোরবান আলী জানান, তাদের বাড়ি যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় খাইটুয়াডাঙা গ্রামে। ২০১৮ সালে ফায়ার ফাইটার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করে সে। মাত্র দুই বছর আগে বিয়ে করেছে সে। স্ত্রী কাকলী আক্তার। সিয়াম নামে ৬ মাস বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে তাঁর। দুই ভাইবোনের মধ্যে গাউসুল ছিল ছোট। সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনে কর্মরত ছিলেন তিনি। সেদিন আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে প্রথমেই তারা ছুটে যায় আগুন নেভাতে। সেখানেই বিস্ফোরণে দগ্ধ হন গাউসুল আজম।
গত ৪ জুন (শনিবার) রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। রাত ১০টার পর আগুনের খবর ছড়িয়ে পড়ে। ১১টার দিকে দাহ্য পদার্থ থাকা বেশ কয়েকটি কনটেইনার বিস্ফোরিত হয়। রাত ১২টার পর থেকে আসতে থাকে মৃত্যুর খবর।
এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৭ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৪৭ জনের মধ্যে ২৭ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। এসব মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে এখনো ১৯ জনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।