কামরুল ইসলাম দুলু: কথা ছিল রাত ১০ টার মধ্যে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু ফোন করে স্ত্রীকে জানালেন ডিপোতে আগুন লেগেছে ফিরতে দুইঘন্টা দেরি হবে। সেই দুই ঘন্টা আর শেষ হলো না। ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর থেকে আর কোন খবর নেই চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের মসজিদ্দা গ্রামের আবুল হাসেমের। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাভার্ডভ্যান চালাতেন তিনি।
শনিবার রাতে কাভার্ডভ্যান থেকে মাল আনলোড করতে গিয়েছিলেন বিএম ডিপোতে। কথা ছিল রাত ১০টার মধ্যে গাড়ি আনলোড করে বাড়ি ফিরে যাবেন। কিন্তু ১০টার সময় তিনি বাড়ি না ফিরে ফোন দিয়ে স্ত্রীকে মেয়েদের ভাত দিতে বলেন। আগুন লাগাতে গাড়ি আনলোড করতে সময় লাগবে দুই ঘণ্টা। তারপর বাড়ি ফিরবেন বলে জানান।
হাসেমের ১৩ বছর বয়সী সন্তান এখন অপেক্ষার প্রহর গুনছে—কখন দু ঘণ্টা শেষ হবে ! সে বলছে, ‘বাবা মাকে বলেছিল কিন্তু বাবা এখনো এলোনা। এই দুই ঘণ্টা কখন শেষ হবে ? আপনারা আমার বাবাকে ফিরিয়ে দেন। আমাদের আর কেউ নাই।’ ১৩ বছর বয়সী সন্তানের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে আছে। আশপাশের অনেকে এসেছেন সান্তনা দিতে। মেয়েদের কান্না দেখে সবার চোখে পানি। সান্তনা দেওয়ার ভাষা নাই কারো মুখে। কুমিরার মসজিদ্দায় আবুল হাসেমের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল এই চিত্র। স্বামী ফিরে আসার প্রহর গুনছেন স্ত্রী মুসলিমা বেগমও। বার বার মুর্চ্ছা যাচ্ছিলেন তিনি। দুই মেয়ে এক সন্তানের ভবিষ্যত কি হবে। কিভাবে বেঁচে থাকবেন। শান্তনা দিতে প্রতিবেশীরাও দিতে পারছে কোন সান্তনা।