সাকিবের বরিশালকে বিদায় করে কোয়ালিফায়ারে রংপুর রাইডার্স

ছবি: সংগৃহীত
CPLUSTV
CTG NEWS
CPLUSTV
শেয়ার করুন

সিপ্লাস ডেস্ক: মেহেদী হাসান মিরাজ আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাটে এক সময় দুশোর আভাস দিচ্ছিল ফরচুন বরিশাল। এই দুজনের বিদায়ের পর মাঝের ওভারে অনেকগুলো ডটবলের চাপ তাদের হিসাব দেয় বদলে। স্লগ ওভারে পর্যাপ্ত রান না আসার ঘাটতি নিয়ে বোলিংয়েও সেরা অবস্থায় থাকল না তারা। রান তাড়ায় রনি তালুকদারের ঝড়ের পর রংপুর রাইডার্সের হাল ধরলেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি। তার ফিফটিতে সাকিব আল হাসানদের বিদায় করে ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে থাকল রংপুর।

রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) এলিমিনেটর পর্বের ডু অর ডাই ম্যাচটা ছিলো সাকিব আল হাসানের বিপিএলের শততম ম্যাচ। ব্যাট হাতে এইদিন বাইশগজে না নামলেও, বল হাতে এইদিন প্রথম ওভারেই আসেন সাকিব। তবে পুরো ওভারে দেননি একটা রানও, বরং শূন্য রানেই তিনি তুলে নেন নাইম শেখের উইকেট। দ্বিতীয় ওভারে ২ ও তৃতীয় ওভারে আসে ৬ রান।

তবে এরপরই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় রংপুর রাইডার্স, ঘুরে দাঁড়ায় তারা। পাওয়ার প্লের প্রথম ৩ ওভারে ১ উইকেটে মাত্র ৮ রান করা দলটা পাওয়ার প্লে শেষ করে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৫ রানে! রনি তালুকদার ও শামীম পাটোয়ারী মিলে ৪র্থ ও ৫ম ওভারে ১৫ রান আর ষষ্ঠ ওভারে দলকে এনে দেন ১৭ রান।

পাল্লা দিয়ে রান করতে থাকেন দুজনে, রনি তালুকদারের ব্যাট চলতে থাকে একটু বেশিই আগ্রাসীরূপে। অবশ্য ইনিংসটা রনি টেনে নিতে পারেননি, ১৭ বলে ১৯ করে রাব্বির শিকার হন তিনি। সেই সাথে ভাঙে শামিমের সাথে রনির ৪০ বলে ৬১ রানের জুটি। রনি ফিরলেও অধিনায়ক সোহানের সাথে জুটি জমিয়ে তুলেন শামিম, তুলে নেন এবারের বিপিএলে নিজের প্রথম ফিফটি।

তবে ১৩ বলে ১৮ করে সোহান সাকিবের ফাঁদে পড়লে এরপর নিকোলাস পুরানের সাথে ২৬ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথেই রাখেন শামিম। তবে পুরান জ্বলে উঠতে পারেননি আজ, ৮ বলে ৫ করেন তিনি। শামিম ফেরেন জয় থেকে ৩১ রান দূরে থাকতে, ১৬.৪ ওভারে। আউট হবার আগে অবশ্য ম্যাচসেরার পুরস্কার নিশ্চিত করেই যান, ৫১ বলে করেন ৭১ রান।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিলো ৮ রান, শেখ মেহেদী জোড়া চার হাঁকালে ৩ বল বাকি থাকতেই কোয়ালিফায়ারে পা রাখে রংপুর রাইডার্স, সে সাথে নিশ্চিত হয়ে যায় বরিশালের বিদায়। শেখ মেহেদী ৯ বলে ১৮ ও দাসুন শানাকা অপরাজিত থাকেন ১২ বলে ১৬ রানে। বল হাতে দুটো করে উইকেট নেন সাকিব, রাব্বি ও খালেদ আহমেদ। তবে ব্যাট হাতে সফল হলেও বল হাতে আজ নিষ্প্রভ ছিলেন মেহেদী মিরাজ।

এর আগে অবশ্য জয়ের নেশাতেই মাঠে নামে ফরচুন বরিশাল। শুরুটাও বেশ আশানুরূপ ছিল বরিশালের। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে রংপুরকে চাপে রাখে বরিশালের উদ্বোধনী জুটি। যদিও এইদিন ইনিংস উদ্বোধন করতে আসেননি নিয়মিত ওপেনার এনামুল হক বিজয়, তার বদলে এই ওপেনিংয়ে আসেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার সঙ্গী বিধ্বংসী ক্যারিবীয় আন্দ্রে ফ্লেচার। তবে এইদিন বিধ্বংসী হয়ে উঠতে পারেননি ফ্লেচার, ঝড় হয়ে উঠার আগেই ফিরেন ১৬ বলে ১২ রানে।

ফ্লেচার ১২ রানে ফিরলেও মিরাজের সাথে গড়ে দিয়ে যান বড় সংগ্রহের ভিত্তি। তাদের দুজনের জুটিতে পাওয়ার প্লেতে আসে ৪৬ রান। ওয়ানডাউনে নেমে জ্বলে উঠেন মাহমুদউল্লাহও, মিরাজের সাথে তাল মিলিয়ে বাড়াতে থাকেন দলের সংগ্রহ। তবে ২১ বলে ৩৪ করে তিনি ফিরে গেলে ভাঙে দুজনের জুটি। এই জুটি থেকে আসে ৪৯ বলে ৬৯ রান।

মাহমুদউল্লাহ আউট হলে সবাই যখন সাকিবের অপেক্ষায়, তখন সবাইকে অবাক করে মাঠে আসেন করিম জানাত। যদিও মিরাজের সাথে তার জুটিটা বড় হয়নি মিরাজ আউট হলে। অবশ্য আউট হবার আগে যা করার, তাই করে দিয়ে গেছেন মিরাজ। খেলেন ৯ চার ১ ছক্কায় ৪৮ বলে ৬৯ রানের ইনিংস।

মিরাজ আউট হলেও সাকিব আসেননি, আসেন রাজাপাকশে। তবে হঠাৎ কমে আসে রানের গতি, হারিয়ে ফেলে শুরুর ধাচ। যদিও শেষ ৩ ওভারে ৩৫ রান আসলে মানানসই হয় বরিশালের ইনিংস; ৩ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে আসে ১৭০ রান। জানাত ২৫ বলে ৩৩ ও রাজাপাকশে ১০ বলে ১৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। রংপুরের হয়ে ইসরু উদানা ২৩ রানে নেন ২ উইকেট।