ল্যাব টেস্টে রিপোর্ট: সেই বিরিয়ানিতে কুকুরের মাংস ছিল না

ছবি: সংগৃহীত
CPLUSTV
CTG NEWS
CPLUSTV
শেয়ার করুন

সিপ্লাস ডেস্ক: ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার নরসিংহপুর বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন আল্লাহর দান বিরিয়ানি হাউজ-৫ নামের দোকান থেকে জব্দ করা মাংসে নিয়ে তুলকালামের পরে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠিয়েছিল আশুলিয়া থানা পুলিশ। সেই নমুনার টেস্ট রিপোর্ট এসেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী পাঠানো স্যাম্পল কুকুরের মাংস নয় বলে জানিয়েছেন সাভার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ সাজেদুল ইসলাম।

মোঃ সাজেদুল ইসলাম জানান, আশুলিয়া থানার এক কর্মকর্তা মাংস পরীক্ষার জন্য আমাদেরকে ‘স্যাম্পল’ দিয়েছিলেন যা আমরা ঢাকায় আমাদের ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছিলাম। সেই রিপোর্ট আমাদের হাতে এসেছে এবং তাতে উল্লেখ রয়েছে যে পাঠানো স্যাম্পলে ওটা কুকুরের মাংস ছিলো না। এই টেস্ট রিপোর্ট আশুলিয়া থানায় প্রেরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আশুলিয়া থানার এসআই সুব্রত রায় বলেন, ‘আজকেই রিপোর্ট হাতে পেয়েছি। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রিপোর্ট দিয়েছেন যে মাংসটি কুকুরের নয়।’ তাহলে সেটি কিসের মাংস ছিল জানতে চাইলে এসআই বলেন, ‘মূলত অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা নমুনা দিয়ে জানতে চেয়েছিলাম এটি কুকুরের মাংস কি না। সে অনুযায়ী রিপোর্ট দিয়েছে।’

রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে জানা যায়, মলিক্যুলার টেস্ট বা আণবিক পরীক্ষার ফলাফল বলছে— এটি কুকুরের মাংস নয়। কেন্দ্রীয় রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. গোলাম আজম চৌধুরী স্বাক্ষরিত রিপোর্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ড. গোলাম আজম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা মাংসের নমুনা পিসিআর টেস্ট ও মলিক্যুলার টেস্ট করে দেখেছি— সেটি কুকুরের মাংস না।’

তাহলে এটি কিসের মাংস, এমন প্রশ্নে এ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, ‘নমুনা দিয়ে আসলে এটি কুকুরের মাংস কি না তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাই আমরা লিখিতভাবে শুধু সেই অংশই উল্লেখ করেছি। তবে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে সেটি বোভাইন বা তৃণভোজী প্রাণী যেমন— গরু, ছাগল, মহিষ কিংবা ভেড়ার মাংস। এই চারটি প্রাণীর মধ্যে যেকোনো একটির মাংস এটি।’

এ ব্যাপারে আল্লাহর দান বিরিয়ানি হাউজ দোকানের একটি শাখার মালিক সায়েদ হোসেন বিল্লাল বলেন, আশুলিয়া এবং কাশিমপুরে আমাদের মোট ৭টি শাখা রয়েছে। এই যে কিছু মানুষ চক্রান্ত করে আমাদের ফাঁসিয়ে দিলো, এর ফলে এখন কাশিমপুরের দুইটি শাখা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। আর এখানের বাকি ৫টি শাখাও প্রায় বন্ধের পথে। যেখানে এক একটি শাখায় প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ হাজার বিরিয়ানি বিক্রি হতো, এই ঘটনার পর থেকে বিক্রি প্রায় নাই বললেই চলে।

তিনি আরও জানান, দোষ না করেও অহেতুক শাস্তি পেলাম আমরা। শুনেছি মাংসের টেস্ট রিপোর্ট এসেছে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে এবং সেখানে এসেছে ওটা কুকুরের মাংস না। তবে রিপোর্ট এখনও আমরা হাতে পাইনি। ওটা হাতে পেয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানাবো। যারা চক্রান্ত করে আমাদেরকে ফাঁসিয়ে সর্বশান্ত করার চেষ্টা করেছে, আমরা উপজেলা প্রশাসন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর সুষ্ঠু বিচার চাই।