রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি: রাঙ্গুনিয়া সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে যে কোন ধরণের রাজনৈতিক ও কিংবা অরাজনৈতিক মিছিল-মিটিং সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারী) কলেজের নির্ধারিত প্যাডে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ.কে.এম সুজা উদ্দীন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়৷ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, মিছিল-মিটিং করতে হলে কলেজ কতৃপক্ষের অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।এদিকে কলেজ অধ্যক্ষের দেয়া এমন বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পক্ষে-বিপক্ষে নানা মন্তব্য করতে দেখা গেছে।
এই ব্যাপারে উত্তরজেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি মাহমুদুল ইসলাম রাসেল তার ফেসবুক আইডিতে বিজ্ঞপ্তির ছবি দিয়ে লেখেন, “রাঙ্গনিয়া কলেজ হোক প্রগতিশীল রাজনীতি চর্চার জন্য উন্মুক্ত। রাঙ্গুনিয়া কলেজে জামায়াত বিএনপির প্রেতাত্মারা জেঁকে বসেছে। কলেজে শ্রেণি কার্যক্রম চলাকালীন রাজনীতির চর্চা হয়। রাজনীতির চর্চা করতে গিয়ে কোনো শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক শ্রেণিকক্ষ থেকে বের করে এনেছে বলে আমার জানা নেই। রাঙ্গুনিয়া কলেজে মিটিং-মিছিল করতে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার এ নিয়মের মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পথে হাঁটছে কর্তৃপক্ষ। এ নিয়মের তীব্র বিরোধিতা করছি এবং নিন্দা জানাচ্ছি।”
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন অভিভাবক বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মিছিল মিটিং হলে আমারা সন্তানদের নিয়ে ভয়ে থাকি। ইদানীং ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে। এরপর থেকে আমরা আতংকে ছিলাম। প্রতিষ্ঠানের বাইরে নেতৃত্ব দিয়েও রাজনৈতিক বিকাশ ঘটনো যায়। তাই এই ঘোষণাটা ইতিবাচক। এটি যেন বলবৎ থাকে।”
জানতে চাইলে সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা এবং উত্তরজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আকতার হোসেন খান এই ব্যাপারে বলেন, “রাঙ্গুনিয়া কলেজ ছাত্র রাজনীতি বিকাশের সূতিকাগার। এই কলেজে নেতৃত্ব দেওয়া অনেক নেতা আজ জাতীয় ও বিভিন্ন অঙ্গনে নেতৃত্ব দিয়ে দেশ জাতির সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। রাঙ্গুনিয়ার অনেক প্রতিষ্ঠিত রাজনীতিবিদ সৃষ্টি হয়েছে এই কলেজ থেকে। তাই কলেজ কতৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তটি কেন নেওয়া হয়েছে তা আমরা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবো।”
এই ব্যাপারে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাসেল রাসু বলেন, রাঙ্গুনিয়া কলেজে ছাত্রলীগের “পদধারী” এবং “পদবঞ্চিত” এই দুটি গ্রুপ সক্রিয়৷ যারা পদবঞ্চিত তারা সাপ্তাহিক একটা মিছিল করে বলে শুনেছি। এই নিয়ে দু’গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনার প্রেক্ষিতে কলেজ কতৃপক্ষ হয়ত এমন সিদ্ধান্ত দিতে পারে। তবে মিটিং মিছিল নিষিদ্ধ করার মতো কোন ঘটনা আমার জানামতে ঘটেনি। এই ব্যাপারে আমরা তৎপর রয়েছি। বিষয়টি নিয়ে কাল (আজ বৃহস্পতিবার) কলেজ কতৃপক্ষের সাথে আমরা কথা বলবো।”
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ.কে.এম সুজা উদ্দীন বলেন, “ইদানীং কলেজে মিছিল মিটিং এবং সভা-সমাবেশ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। অথচ এখন একাদশ শ্রেণিতে নতুন আগত শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শ্রেণি কার্যক্রম চলছে অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীদেরও। তাই কলেজের সুষ্ঠু শ্রেণি কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থে সবার সাথে আলোচনা করে তাৎক্ষণিক এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে অনুমতি সাপেক্ষে করার কথা বলেছি আমরা। পরবর্তীতে এই ব্যাপারে করণীয় বিষয়ে আমরা নতুন করে সিদ্ধান্ত জানাবো।”