রাউজান প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের রাউজানে পাওনাদারদের ঘরে কাজী দিদারুল আলম (৫২) নামের এক ঋণগ্রহীতা লাশ উদ্ধারের ঘটনার একসপ্তাহ পর অন্যতম মূল হোতা মো. ইদ্রিস মিয়া (৫০) কে গ্রেপ্তার করেছেন র্যাব-৭।
মঙ্গলবার (২৩ মে) সকালে র্যাব তাকে রাউজান থানায় হস্তান্তর করেন। রাউজান থানা পুলিশ তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুপুর ১ টায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল হারুন। এর পূর্বে র্যাব-৭ মঙ্গলবার ভোর রাতে অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া এলাকার একটি আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া মুহাম্মদ ইদ্রিস মিয়া রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের মোকামী পাড়া গ্রামের খলিল দফদারের বাড়ির মৃত নুরুল আমিনের ছেলে। এছাড়া তিনি নোয়াপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১৬ মে) বেলা ৩ টার দিকে রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মোকামীপাড়া গ্রামের মৃত সায়ের আহমেদের পুত্র মো. ইউনুসের (পাওনাদার) শয়ন কক্ষ হতে কাজী দিদারুল আলমের (৫২) মরদেহ উদ্ধার করেন রাউজান থানা পুলিশ। নিহত কাজী দিদারুল আলম একই গ্রামের কাজী বাড়ির কাজী শামশুল আলমের ছেলে।
এই ঘটনার পরের দিন নিহতদের পুত্র কাজী মিনারুল আলম ইমন (২২) বাদী হয়ে ৩৪৩/৩০৬/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামীরা হলেন একই গ্রামের ইউনুচ ড্রাইভারের বাড়ির মৃত সায়ের আহমদের ছেলে মুহাম্মদ ইউনুছ (৫০), খলিল দফাদারের বাড়ির মৃত নুরুল আমিনের ছেলে মুহাম্মদ ইদ্রিস মিয়া (৫০), চট্টগ্রাম নগরীর চাঁন্দগাওয়ের বাসিন্দা মুহাম্মদ আলমগীর (৫০) ও ফেরদৌস নামের একজনসহ অজ্ঞাত আরও সাত আটজন।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নিহত কাজী দিদারুলের কাছ থেকে আসামিরা ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা পাওয়ার দাবী করতেন। নানাভাবে পাওনা টাকা আদায়ে চাপ দিতেন ইউনুছ আর ইদ্রিসের নেতৃত্বে সাত আটজন। এরপর গত আড়াই বছর আগে বাড়ি ছেড়ে স্ত্রী সন্তান নিয়ে চট্টগ্রাম নগরে চলে যান দেনাদার দিদারুল। তবে পরিবার বলছে মাসে মাসে দেনাশোধ করতে পাওনাদারদের কিস্তি হিসেবে টাকা দিতেন দিদারুল। এরমধ্যে গত শুক্রবার রাতে দিদারুলকে চট্টগ্রাম নগর থেকে তুলে আনেন ইউনুস আর ইদ্রিস মিয়াসহ সাত আটজন। সবাই মিলে আটকে রাখেন ইউনুছের পাকা বাড়ির একটি বদ্ধ কক্ষে। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার বিকেলে ইউনুছের পাকা বাড়ির ওই কক্ষে খাটের উপর গলায় লুঙ্গি পেছানো ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে থানায় মামলা হয়।