রাউজান প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের রাউজানে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১ বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে চার টায় উপজেলার ১৪ নম্বর বাগোয়ান ইউনিয়ন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কোয়েপাড়া গ্রামের সওদাগর পাড়ার নুরুল হক মেম্বারের বাড়ীতে বিকাল সোয়া ৪টার দিকে এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে।
রাউজান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল স্টেশনের ইনচার্জ নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা বিকাল সাড়ে ৪ টায় অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। প্রায় দেড় ঘন্টা প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট হতে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এতে ১১টি কাঁচাঘর পুড়ে যায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য এখলাস হোসেন বলেন, আগুনের সংবাদ পেয়ে আমি ফায়ার সার্ভিসে খবর দিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। ফায়ার সার্ভিস আসার পূর্বে স্থানীয়রা আগুন নিভাতে অপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছেন। এয়াকুব সওদাগরের বাড়ি হতে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুনের লেলিহান শিখা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের তীব্রতার কারণে পরণের কাপড় ছাড়া কিছুই রক্ষা করতে পারে নি। আগুনে ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন মৃত শাহ আলমের ছেলে মো. লোকমান,মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে মো. নছির, মৃত আব্দুস ছত্তারের ছেলে এয়াকুব সওদাগর, মো. শফিকুল ইসলাম, হাজী রফিক, মৃত আলী আহম্মেদের ছেলে বদিউল আলম, শামসুল আলম, মো হারুনের স্ত্রী জলিয়া খাতুন, ছেলে মো. ইলিয়াস, আব্দুল বারেকের ছেলে তোয়ান সওদাগর ও আব্দুল হকের পুত্র রাজা মিয়া।
ক্ষতিগ্রস্তদের একজন মো. লোকমান বলেন, আমার চাচা ইয়াকুব নতুন ঘর তৈরির জন্য গত মঙ্গলবার স্বর্ণ বিক্রি করে দুই লক্ষ টাকা বাড়িতে রেখেছিলেন। সেই নগদ টাকা সহ ৩ভরি স্বর্ণ পুড়ে যায়। নাছিরের ছোট ভাই মো. আবছার দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে ভাড়ায় অটোরিকশা (সিএনজি) চালিয়ে নিজের একটি অটোরিকশা ক্রয়ের জন্য জমানো সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা বাড়িতে এনে রেখেছিলেন। সেই টাকাও পুড়ে গেল। মালেশিয়া প্রবাসী মো. শফির নগদ ৩০ হাজার টাকা ও ১০ ভরি স্বর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এছাড়া অগ্নিকান্ডে আমাদের জমির দলিল, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ছেলেদের বই-খাতা, একাডেমিক সার্টিফিকেট, আসবাবপত্রসহ সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আমরা ক্ষতিগ্রস্তরা আশেপাশের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। স্থানীয় ইউপি সদস্য এখলাস হোসেন রাতের খাবারের আয়োজন করেছেন। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারের খাবারের ব্যবস্থা করছেন প্রবাসী ফারুক। আগুনে অনেকের শেষ সম্বলও পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ভূপেষ বড়ুয়া বলেন, ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১টি পরিবারের প্রায় ৫০ লক্ষাধিক টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ হতে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) প্রতিটি পরিবারকে ৩০ কেজি করে চাল ও শীতবস্ত্র প্রদান করা হবে।