সিপ্লাস ডেস্ক: রাশিয়ার পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট পুতিন তার ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে গিয়ে তীব্র ভাষায় পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনা করেছেন। এই সংঘাতের জন্য তিনি পশ্চিমা দেশগুলোকে দায়ী করে বলেন, ইউক্রেনকে তারা ‘রুশ-বিরোধী’ দেশে পরিণত করতে চাইছে। রাশিয়ার অস্তিত্ব সংকটের মুখে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রথম বার্ষিকীর কয়েকদিন আগে প্রেসিডেন্ট পুতিন এই ভাষণ দিলেন। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়া বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তবে এবারের বসন্তকালে তারা একটা নতুন আক্রমণ শুরু করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিবিসির রাশিয়া বিষয়ক সম্পাদক বলছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন তার ভাষণে ইউক্রেন যুদ্ধের একটা মিথ্যা বয়ান দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, যাতে স্বদেশে এই যুদ্ধের পক্ষে সমর্থন বাড়ানো যায়। পুতিন ধাপে ধাপে এই অভিযান চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দেন। তিনি এটিকে ঐতিহাসিক রুশ ভূখণ্ডের মানুষকে রক্ষার মিশন বলে বর্ণনা করেন।
প্রেসিডেন্ট পুতিন দাবি করেন, রাশিয়া ইউক্রেনের পূর্ব দনবাস অঞ্চলের সংঘাত শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের চেষ্টা করেছে। তিনি বলেন, শান্তির ব্যাপারে পশ্চিমাদের যে অঙ্গীকার, তা আসলে এক ধরণের প্রতারণা। তিনি আরো অভিযোগ করেন, কিয়েভ সরকার জীবাণু এবং পরমাণু অস্ত্র পাওয়ার চেষ্টা করছে।
পুতিন বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এটি সমাধানের জন্য সব রকমের চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু আমাদের পেছনে ভিন্ন খেলা চলছিল। পশ্চিমারা আসলে সময়ক্ষেপণ করছিল।’
মস্কো থেকে বিবিসির উইল ভারনন বলছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিনের ভাষণটি ছিল দেশপ্রেমের বাগাড়ম্বরে পূর্ণ। তিনি আবারও নিজের দেশকে ভুক্তোভোগী হিসেবে দেখিয়েছেন, যুদ্ধ শুরুর জন্য নিজের দায় এড়িয়ে পশ্চিমা দেশগুলোকে দোষারোপ করে গেছেন।
তবে প্রেসিডেন্ট পুতিনের ভাষণে ইউক্রেনের খেরসন থেকে যে রুশ সৈন্যদের হটিয়ে দেওয়া হয়েছে, তার কোনো উল্লেখ ছিল না। এটিকে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার সবচেয়ে বিব্রতকর পরাজয়গুলোর একটি বলে গণ্য করা হয়।
একজন জ্যেষ্ঠ ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিনের ভাষণে তিনি যে কতটা বিভ্রান্ত এবং কতটা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছেন, সেটাই ফুটে উঠেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইলো পডোলিয়াক বলেন, রাশিয়া এখন যে অচলাবস্থার মধ্যে পড়েছে, সেটি থেকে উত্তরণ পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। ‘তিনি একেবারেই ভিন্ন এক বাস্তবতার মধ্যে আছেন, যেখানে ন্যায়বিচার এবং আন্তর্জাতিক আইন নিয়ে কোনো ধরণের আলোচনা শুরুর কোনো সুযোগ নেই।’