বৈধ পথে টাকা পাঠিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান, হুন্ডি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি

ছবি: সংগৃহীত
CPLUSTV
CTG NEWS
CPLUSTV
শেয়ার করুন

সনজিত কুমার শীল,আমিরাত প্রতিনিধি: সংযুক্ত আরব আমিরাতে যে সকল হুন্ডি ব্যবসায়ী আছে তাদের তালিকা করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগসহ অবৈধ পথে দেশে টাকা পাঠানোর সকল পথ বন্ধে নানা উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ দূতাবাস ও কনস্যুলেট জেনারেল দুবাই ।

বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণ ও অবৈধ পথ বন্ধের লক্ষ্যে ,রবিবার ( ১২ জুন ) শারজায় বঙ্গবন্ধু হলে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল দুবাইয়ের আয়োজনে মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয় ৷ আমিরাতের বিভিন্ন ব্যাংক, এক্সচেঞ্জ , ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় শুরুতে হুন্ডি প্রতিরোধে পরিকল্পনার কথা জানান কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন । তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের ভূমিকা অপরিসীম ।প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি । বিশেষ করে আমিরাত দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে ব ইউক্রেন – রাশিয়া যুদ্ধ কিংবা যেকোনো অস্থিতিশীল সময়েও বাংলাদেশের অর্থনৈতিকে সচল রেখেছে।

জামাল হোসেন বলেন , ‘গত মে মাসে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রেরণে প্রথম স্থানে ছিল আমিরাত । মে মাসের মোট প্রেরিত রেমিট্যান্স ছিল ১৮৮ কোটি ৫৩ লাখ মার্কিন ডলার , তারমধ্যে কেবল আমিরাত থেকে গিয়েছে ৩৩ কোটি ৮৬ লাখ মার্কিন ডলার । সকলে যদি বৈধ পথে দেশে টাকা পাঠান তাহলে এই সংখ্যা আরও বহুগুণ বৃদ্ধি পেত । একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে সকলকে দায়িত্বশীল হতে হবে । বিশেষ করে প্রবাসীদের সচেতন হতে হবে ।

বাংলাদেশ সমিতির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন তার আলোচনায় বলেন , রেমিট্যান্স প্রেরণ করে প্রবাসীরা যেন সুফল পায় সেই দিকেও খেয়াল রাখতে হবে । বিমানবন্দরে হয়রানি , বিমান ভাড়া ও সার্ভিসের যেসকল অভিযোগ আছে সেদিকে কর্তৃপক্ষকে নজর দিতে হবে । তিনি হুন্ডি ব্যবসায়ীদের লাগাম টানতে দূতাবাস ও কনস্যুলেটের সকল উদ্যোগে আমিরাত সরকারের নিবন্ধিত সমিতির সহযোগিতা থাকবে বলে জানিয়েছেন ।

চেয়ারম্যান মাহতাবুর রহমান নাসের সিআইপি বলেন , দেশের রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে আমাদের সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে । ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন , নিজ নিজ কোম্পানির কর্মীদের বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণের জন্য আহ্বান করতে হবে । বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কর্মীদের রেমিট্যান্স সঠিকভাবে পাঠানো নিশ্চিত করতে হবে । জনতা ব্যাংক , আল ফারদান এক্সচেঞ্জ , জিসিসি এক্সচেঞ্জ , আল রোস্তমানি এক্সচেঞ্জ , ব্রাক ব্যাংকসহ উল্লেখযোগ্য ব্যাংক ও এক্সচেঞ্জের প্রতিনিধি , ব্যবসায়ী , সাংবাদিকেরা আলোচনায় অংশ নিয়ে হুন্ডি বন্ধের লক্ষ্যে বিভিন্ন পরামর্শ দেন । পরামর্শে সবচেয়ে গুরুত্ব পেয়েছে হুন্ডি ব্যবসায়ীদের তালিকা করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ , সার্ভিস চার্জ ছাড়া টাকা প্রেরণের সুবিধা প্রণোদনা ৪-৫ শতাংশ করা , দেশে গ্রাহকদের হয়রানি বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ করা ।

মান্যবর কনসাল জেনারেল বলেন বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানো সকল প্রবাসীদের সম্মাননা প্রদান সহ নানান সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করতে দূতাবাস ও কনস্যুলেট বদ্ধ পরিকর।

সংযুক্ত আরব আমিরাত রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম সাইফুল তার বক্তব্যে  বলেন, প্রবাসীদের উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে,বিমানবন্দরে হয়রানি বন্ধ করতে হবে, বৈধ পথে পাঠানো রেমিট্যান্স এর জন্য পয়েন্ট রিওয়ার্ড সিস্টেম চালু করতে হবে যার মাধ্যমে প্রবাসীরা দেশে যাওয়ার সময় বিমানের টিকিট কাটার সময় পয়েন্ট ব্যবহার করে মূল্য ছাড় পেতে পারে।

কনস্যুলেটের শ্রম সচিব ফকির মনোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন , জনতা ব্যাংকের দুবাই ও শারজাহ ব্রাঞ্চের ম্যানেজার যথাক্রমে আব্দুল মালেক ও শওকত আকবর ভূইয়া , আল ফারদান এক্সচেঞ্জের সুলতান মাহমুদ (হেড ,করিডর বিজনেস) , ব্রাক ব্যাংকের প্রতিনিধি সায়েদ আবু নাছের , ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী বাবুল , ইঞ্জিনিয়ার আবু জাফর নাছির উদ্দীন কাউসার প্রমুখ ।