সিপ্লাস ডেস্ক: রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন নিয়ে বিএনপি নেতাদের আগ্রহ না থাকার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিএনপির অনাগ্রহের কারণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি তাদের অশ্রদ্ধা।
তিনি বলেন, বিএনপির তো দেশটা নিয়েই কোনো আগ্রহ নেই। তাদের আগ্রহের মূল কেন্দ্রবিন্দু তারেক রহমান ও বেগম খালেদা জিয়া। দেখুন তারা কিভাবে শাস্তিপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বানিয়েছে এবং বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা স্বপ্ন দেখে! আমরাও চাই তিনি (তারেক রহমান) দেশে ফিরে আসুক, শাস্তির মুখোমুখি হোক, বিচার কাজের মুখোমুখি হোক। বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে তাদের সমস্ত আগ্রহ। জনগণ বা দেশ নিয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই।
রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সংসদীয় দলনেতা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার দল একজন অসাধারণ ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দিয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. সাহাবুদ্দিন মাঠের রাজনীতি করেছেন। রাজনীতি করতে গিয়ে তিনি ঝুঁকি নিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা, তার মধ্যে ভদ্রতা, নম্রতা একইসাথে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা সব কিছুরই সমন্বয় আছে। এ বিষয়ে বিএনপির অনাগ্রহের কারণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি তাদের অশ্রদ্ধা।
অ্যাডভোকেট মো: সাহাবুদ্দিন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ পাবনা টাউন হল ময়দানে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলনকারীদের অন্যতম ছিলেন মো. সাহাবুদ্দিন। ১৯৬৭-৬৮ সালে তিনি পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৬৯-৭০ সালে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি, ১৯৭০-৭৩ সালে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪-৭৫ সালে জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭৫ সালে তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন, দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে মিছিল করেছিলেন এবং সেই অপরাধে ২০ আগস্ট অ্যাডভোকেট সাহাবুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং ৩ বছরের বেশি সময় তিনি কারাগারে অবরুদ্ধ ছিলেন। কারামুক্তির পর ১৯৮০ সালে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, এরপর অ্যাডভোকেট সাহাবুদ্দিন বিসিএস জুডিসিয়াল ক্যাডারে যোগদান করেন এবং ১৯৯৫-৯৬ সালে তিনি জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব নির্বাচিত হন। সিনিয়র জজ হিসেবে অবসরের পর তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি দমন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব দেন। সেই দায়িত্ব পালনকালে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ যে অসত্য সেটি তুলে ধরতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। আপনারা জানেন, পদ্মা সেতুতে যে কোনো দুর্নীতি হয়নি সেটি কানাডার আদালতে প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আসলে গণতন্ত্র বা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি অশ্রদ্ধাশীল বিধায় বিএনপি এ ধরণের কথা বলতে পারে যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই। এর অর্থ হচ্ছে গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি তাদের কোনো আগ্রহ নেই।