বঙ্গবাজারের আগুন কেড়ে নিয়েছে মাহীদের ঈদ আনন্দ

সিপ্লাস ডেস্ক: রাজধানীর একটি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মায়েশা ইসলাম মাহী। পুরান ঢাকার আগামাছি লেনের বাসা থেকে মাঝেমধ্যেই বাবার হাত ধরে আসতো বঙ্গবাজারে নিজেদের দোকানে। ভয়াবহ আগুনে বঙ্গবাজার এখন এক খণ্ড ধ্বংসস্তূপ। আজও সেখানে বাবার হাত ধরে এসেছিল ছোট্ট মাহী। নিষ্পলক চোখে দাঁড়িয়ে দেখছিল বাবার পুড়ে যাওয়া দোকান, বঙ্গবাজারের করুণ দৃশ্য। সেখানকার পোড়া গন্ধ আর নিস্তব্ধতা তখন যেন ছোট্ট এই শিশুর নিষ্পাপ মনটাকেও পুড়ে ছারখার করে দিচ্ছিল।

শুক্রবার (৭ এপ্রিল) জুমার নামাজের আগে দুপুর ১২টার দিকে বাবার হাত ধরে বঙ্গবাজারে আসা মাহীর সঙ্গে কথা হয় গণমাধ্যমের।

এসময় মাহী গণমাধ্যমকে বলে, আমার আব্বুর দোকান দেখতে আসছি। আমি মনে করেছিলাম আমাদের দোকানটা পুড়ে নাই। কিন্তু আইসা দেখি সব পুড়ে গেছে। আমার খুব খারাপ লাগছে।

প্রতিবছর বাবা-মা, ছোট ভাইসহ দুই চাচার সঙ্গে কুমিল্লায় দাদার বাড়িতে ঈদ করতে যায় মাহী। এবার সর্বগ্রাসী আগুন কেড়ে নিয়ে তাদের পরিবারের ঈদ আনন্দ। ঈদে বাড়ি যাওয়ার বিষয়ে ছোট্ট মাহী বলে, ঈদে বাড়ি গেলে খুব আনন্দ হয়। সবাই মিলে খেলাধুলা করি। আব্বু নতুন জামা কিনে দেন। এখন সবার মন খারাপ। কেমনে যাবো বাড়িতে?

মাহীর বাবার নাম মো. মাছুম রানা। বঙ্গবাজার মার্কেটের তিন তলায় একটি গোডাউন এবং দ্বিতীয় তলা ও নিচ তলায় তিনটি দোকান ছিল তার। এর মধ্যে দুটি দোকান নিজের আর বাকি দুটি ভাড়া নেওয়া। আগুনে পোড়ার পর এখন সেখানে চিহ্নটুকুও অবশিষ্ট নেই। এ ঘটনায় তাদের পরিবারে নেমেছে কালো মেঘের ছায়া। পরিবারের এই অসহায়ত্ব যেন ছোট্ট মাহীর কোমল হৃদয়কেও নাড়া দিয়ে যাচ্ছে। মাহী জানায়, আজকে (শুক্রবার) আমাদের বাসায় মেহমান আসার কথা। কিন্তু তাতে কি? তার বাবার কাছে এখন কোনো টাকা নেই।

ব্যবসায়ী মাছুম রানা গণমাধ্যমকে বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমার আনুমানিক এক কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। আবার দোকান নিয়ে বসতে পারলে হয়তো নিজের চলার একটি ব্যবস্থা হবে।

তিনি বলেন, আমরা তিন ভাই দোকানে কাজ করতাম। দুজন কর্মচারী ছিল। বাকিরা গার্মেন্টসে কাজ করতো। ঈদে বেচাকেনা বেশি হয়। তাই ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ৪০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম ব্যবসার জন্য। এখন সব হারিয়ে পথে নেমেছি।

ক্যালেন্ডার
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
Scroll to Top