ফেনী প্রতিনিধি: পরশুরাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন মজুমদারের উপর হামলার অভিযোগকে কেন্দ্র করে দিনব্যাপী রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে গুথুমা এলাকায় একটি জানাজায় অংশ নিলে পৌর মেয়র সাজেল চৌধুরীর নেতৃত্বে এ হামলা চেষ্টা করা হয় বলে জানান কামাল চেয়ারম্যান। এ বিষয়ে সন্ধ্যায় পরশুরাম মডেল থানায় উভয়পক্ষ পৃথক ২টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদার জিডিতে,পৌর মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুল আহাদ চৌধুরী,পৌর কাউন্সিলর এনামুল হক এনাম এবং যুবলীগ নেতা ইব্রাহিমকে অভিযুক্ত করেন।
অন্যদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল জিডিতে, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদার, উপজেলা যুবলীগ নেতা ইয়াছিন শরীফ মজুমদার, আবুল কালাম এবং নুরুল ইসলাম সিজানকে অভিযুক্ত করেন।
এ প্রসঙ্গে পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, উভয়পক্ষ থানায় পৃথক ২টি সাধারণ ডায়েরি করেছে। আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে তদন্তের ব্যবস্থা করা হবে। আদালতের নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত আমরা এখনই কিছু করতে পারছি না।
এদিকে কামাল চেয়ারম্যান বলেন, মেয়র সাজেলের বাড়ির পাশে একটি জানাজায় অংশ নেয়ার পর সেখানে মেয়রের নেতৃত্বে পৌর কাউন্সিলর এনামুল হক এনাম, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল আহাদ চৌধুরী, যুবলীগ নেতা আল-আমিন, ইব্রাহিম হঠাৎ আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা চেষ্টা করে। সাজেল প্রকাশ্যে অস্ত্র উচিয়ে ধরে। সাধারণ মানুষজন না থাকলে তখন তারা আমার অবস্থা খারাপ করতো। বলতে পারেন কোন রকমে প্রাণটা নিয়ে বেঁচে এসেছি। দলীয় কোন্দল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরশুরাম একনায়কতন্ত্র চলে সেটা হলো মেয়র বাকিটা আপনারা জানেন।
অন্যদিকে অভিযোগটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা দাবি করে পৌর মেয়র সাজেল বলেন, চেয়ারম্যান যেকোন জানাজায় সবসময় ১৫ থেকে ২০ মিনিট দেরিতে অংশ নেন। মঙ্গলবারও একইভাবে দেরিতে এসে জানাজার নির্ধারিত সময় হওয়ার পরও তিনি বক্তব্য দিতে চাইলে স্থানীয় এক ব্যক্তি অসন্তোষ জানান। তিনি শুধু পেলেই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের লিপ্ত থাকেন। পরে বিষয়টি নিয়ে কামাল চেয়ারম্যান আমি সহ দলীয় নেতাকর্মীদের জড়িয়ে মিথ্যাচার করছে। সেখানে এ ধরনের কিছুই হয়নি।
অন্যদিকে মেয়র সাজেলের জিডিতে উল্লেখ করা হয় চেয়ারম্যানের নাম ছাড়াও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি: ইয়াসিন শরীফকে, তিনি জানান একজন মুসলমান হিসেবে আমরা জানাজায় অংশগ্রহণ করেছি।এত হাজার হাজার মানুষের মধ্যে সকলের সামনে প্রকাশ্যে তিনি হামলা করেছেন যার সাক্ষী হাজারো মানুষ। শুধু এটাই প্রথম নয় এর আগেও প্রকাশ্যে মাইকিং করে তিনি হুমকি দিয়েছিলেন আমাদেরকে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহাদ চৌধুরী বলেন, জানাজায় চেয়ারম্যান সামনে একপাশে ছিলো। আমরা অনেক পেছনে ছিলাম। হামলা চেষ্টাতো পরের কথা, উনার সাথে সামনাসামনি দেখাও হয়নি। উনি একজন প্রবীণ রাজনৈতিক নেতা, তিনি পরশুরামকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য মরিয়া হয়ে আছেন। তাই তিনি দলের নেতাকর্মীদেরকে জড়িয়ে এমন মিথ্যা অভিযোগ রটাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) পরশুরামে কামাল-সাজেলের কোন্দল তুঙ্গে শিরোনামে স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়।