সিপ্লাস ডেস্ক: পদ্মা সেতুর বহুমুখী নির্মাণ কাজ শেষ। এখন চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। বহুল প্রতীক্ষিত স্বপ্নের পদ্মাসেতু আগামী ২৫ জুন সকাল ১০টায় মহা ধুমধামে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই মধ্যে সেতু উদ্বোধনের যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ। সেতুর দুই পাশেই চলছে উদ্বোধনের নানা আয়োজন। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে বিপুলসংখ্যক মানুষ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে যানজট এড়াতে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন সেতুর দুই পাশের সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী ও আড়িয়াল খাঁ সেতুর টোল না নেওয়ার প্রস্তাব করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এদিকে গত ১৩ জুন অর্থ বিভাগে পাঠানো সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আগামী ২৫ জুন বহু প্রতীক্ষিত গর্বের “পদ্মা বহুমুখী সেতু” উদ্বোধন করতে প্রধানমন্ত্রী সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। ওই দিন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য আমন্ত্রিত অতিথিদের বহনকারী যানবাহনসহ সাধারণ যানবাহনের চলাচল বৃদ্ধি পাবে। যানবাহনগুলো ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে অবস্থিত বুড়িগঙ্গা সেতু, ধলেশ্বরী সেতু ও আড়িয়াল খাঁ সেতু অতিক্রম করবে। সেতু তিনটিতে বর্তমানে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে টোল কালেকশন করা হচ্ছে বিধায় যানজটের সৃষ্টি হতে পারে। তাই উদ্বোধনী দিনে টোল আদায় না করার জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিব মৌখিকভাবে অনুরোধ করেছেন।’
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী (বুড়িগঙ্গা-১) সেতু থেকে ইজারার মাধ্যমে দৈনিক ১ লাখ ৯৯ হাজার ১৪৬ টাকা, ধলেশ্বরী সেতু থেকে বিভাগীয়ভাবে দৈনিক ৫ লাখ ৭৮ হাজার ১৯১ টাকা এবং আড়িয়াল খাঁ (হাজী শরীয়ত উল্লাহ) সেতু থেকে বিভাগীয়ভাবে দৈনিক ৬২ হাজার ৩৪৪ টাকা টোল আদায় করা হয়। অর্থাৎ তিনটি সেতু থেকে একদিনে সর্বমোট ৮ লাখ ৩৯ হাজার ৬৮১ টাকা টোল আদায় হয়। ২৫ জুন মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখার জন্য টোল আদায় মওকুফ রাখা প্রয়োজন। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। আগামী রোববার এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মাসেতু। এরপর পর একে একে ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু পুরোপুরি দৃশ্যমান হয়েছে ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দু’টি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হয়েছে সেতুটি।