সিপ্লাস ডেস্ক: যেন এই ভোরের জন্য বহুকাল অপেক্ষায় ছিল পদ্মার দুই পারের মানুষ। যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে পদ্মা সেতুর স্বপ্নের দ্বার।
রোববার (২৬ জুন) সকাল ৬টা থেকে পদ্মা সেতুতে শুরু হয় যান চলাচল। রাত থেকে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে ছিল গাড়ির দীর্ঘ সারি। সকাল ৬টায় যান চলাচল চালুর কথা থাকলেও উৎসুক চালকদের আগ্রহে ৫টা ৪০ মিনিটেই টোল দেওয়া শুরু হয়। সেতুর দুই প্রান্তের টোল প্লাজা দিয়ে সেতুতে উঠতে থাকে শত শত যানবাহন। স্বপ্নের সেতু দিয়ে নদী পার হওয়ার আনন্দে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস দেখা যায় মুন্সিগঞ্জের মাওয়া টোল প্লাজায়।
আর্থিক, প্রকৌশল এবং রাজনৈতিক ত্রিমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দীর্ঘতম সেতুটি উদ্বোধনের ফলে বহুদিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে বাংলাদেশের। শনিবার (২৫ জুন) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন।
মোটরসাইকেল, ব্যক্তিগত গাড়ি, ট্রাক, প্রাইভেটকার, পিকআপসহ রয়েছে পদ্মা সেতু দেখতে আশা হাজার হাজার মানুষ। নির্ধারিত টোল দিয়ে সেতুতে উঠতে থাকেন সবাই। সবার মুখে হাসিমুখ, গণমাধ্যমকর্মীদের হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান অনেকে। অনেকের মুখে আবার ‘জয় বাংলা’ স্লোগান।
শরীয়তপুরগামী মোটরসাইকেল আরোহী সুরুজ রহমান জানান, অবশেষে স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে। ভোর চারটার সময় এসেছি স্বপ্নের সেতুতে। অনেক অনেক যানবাহন আছে সবাই আনন্দিত, আমরা সবাই অনেক খুশি।
শাহিনুর খন্দরকার জানান, শনিবারই মাদারীপুরে বাসায় যাওয়ার কথা ছিলো। তবে পদ্মা সেতু দিয়ে যাওয়ার জন্য আজ এসেছি। এ আনন্দ বলে বোঝাতে পারবো না।
রহমত আলী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। তিনি পারেন, সেটাই প্রমাণ করে দেখালেন। দুর্ভোগের দিন শেষ। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ।
কেরানীগঞ্জ থেকে পরিবার নিয়ে সেতু দেখতে আসা আবুল হাসেম বলেন, কত কত ষড়যন্ত্র হয়েছে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়তার কারণেই এই সেতু হয়েছে। শেখের বেটি প্রমাণ করে দিলেন তিনি পারেন। পরিবার নিয়ে এসেছি শুধু সেতুটাকে দেখার জন্য।
আজ থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ ফেরি ঘাটের ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন ছেড়ে সেতুর উপর দিয়ে মাত্র ৬ মিনিটে সড়কপথে সরাসরি ঢাকায় যাবেন। স্বপ্নের সেতু শুধু রাজধানী ঢাকা এবং দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সরাসরি সড়ক ও রেল যোগাযোগই স্থাপনই করেনি এটি এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বৃহত্তর সংযোগ ও বাণিজ্যের দুয়ার খুলে দিয়েছে।