নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলীতে জোড়া খুনের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী মো. ফয়সালকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। ফয়সালের পরিকল্পনাতেই খুন হন মাসুম ও সজীব। ঘটনার পর থেকে আত্মগোপন করেন ফয়সাল।
বৃহস্পতিবার সকালে নগরের চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম। এর আগে, একইদিন ভোরে নগরের হালিশহর এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ফয়সাল নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার মো. নূর নবীর ছেলে।
র্যাব জানায়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জোড়া খুনের ঘটনাটি ঘটে। খুনে অংশ নেয়া সবার বয়স ১৬ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে। কথিত বড় ভাই ইলিয়াছ মিঠুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত এসব কিশোর ও তরুণ।
ঘটনার দিন (সোমবার) সন্ধ্যায় বান্ধবীকে নিয়ে সাগরিকা জহুর আহমদ স্টেডিয়াম এলাকায় ঘুরতে যান নিহত মাসুমের বন্ধু সিরাজুল ইসলাম শিহাব। ঐ সময় শিহাবকে উদ্দেশ্য করে ফয়সাল ও রবিউল বলেন- ঐ মেয়ের সঙ্গে তোকে মানায়নি। মেয়েটিকে বিভিন্নভাবে উত্যক্তও করেন তারা। বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মারামারিও হয়।
ঘটনার পর মীমাংসার কথা বলে রাত আটটার দিকে উভয়পক্ষকে ডেকে নেন কথিত বড় ভাই ইলিয়াছ মিঠু। সেখানে মিঠুর নির্দেশে এবং ফয়সালের পরিকল্পনায় মাসুম ও সজীবকে বেধড়ক পিটুনি ও ছুরিকাঘাত করেন ফয়সাল ও রবিউল বাহিনী। পরে দুইজনকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে পাহাড়তলী থানায় ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১০ থেকে ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহত সজীবের ভাই। এর আগে কক্সবাজারের চকরিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে মূলহোতা ইলিয়াছ মিঠুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আরো সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আটজনের মধ্যে চারজন হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাদের জবানবন্দিতে ফয়সালের পূর্বপরিকল্পনার কথা বেরিয়ে আসে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম বলেন, আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িত পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে র্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ভোরে নগরের হালিশহর এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ফয়সালকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জোড়া খুনের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী বলে স্বীকার করেন। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নিতে তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।