সিপ্লাস ডেস্ক: ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক বাণিজ্য মন্দা চলছে। ডলার সংকটের কারণে আমদানি সীমিত করেছে সরকার। প্রয়োজনীয় পণ্যও আমদানি করা যাচ্ছে না । ফলে রাজস্ব আয়ে বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
চলমান ডলার সংকট এবং রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্বের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্থরতায় কমে গেছে আমদানি। ফলে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত টানা পাঁচ মাস ধরে চট্টগ্রাম কাস্টমসের রাজস্ব সংগ্রহ কমেছে।
দেশের বৃহৎ শুল্ক স্টেশন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের এপ্রিল মাসে রাজস্ব আদায় হয় ৪৫৫৯ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এটি ১৪.৪৫ শতাংশ কম।
এছাড়া, এপ্রিলে লক্ষ্যমাত্রার ৩৩.৩৪ শতাংশ কম রাজস্ব আদায় হয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসের মধ্যে ৫ মাসে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হয়েছে ঋণাত্বক। অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে ০.১৭ শতাংশ ঋণাত্বক প্রবৃদ্ধি হয়।
এরপর অক্টোবর, নভেম্বরে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হলেও ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ক্রমাগত ঋণাত্বক প্রবদ্ধি হচ্ছে। এর ফলে কাস্টমসের সার্বিক প্রবৃদ্ধিও কমে যাচ্ছে।
অর্থবছরের শুরুতে জুলাই মাসে কাস্টমসের প্রবৃদ্ধি ৪০.৮৭ শতাংশ হলেও ক্রমাগত কমে এপ্রিল পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১.৫৭ শতাংশে। অথচ ২০২১-২২ অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত কাস্টমসের সার্বিক প্রবৃদ্ধি ছিলো ২০.৭০ শতাংশ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক বাণিজ্য মন্দা চলছে। ডলার সংকটের কারণে আমদানি সীমিত করেছে সরকার। প্রয়োজনীয় পণ্যও আমদানি করা যাচ্ছে না । ফলে রাজস্ব আয়ে বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে কাস্টমসের রাজস্ব আয়েও ধারাবাহিকতা থাকতে হবে বলে মনে করেন তারা।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, “চাহিদা অনুযায়ী এলসি দিতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ফলে আমদানির পরিমাণ গত বছরের তুলনায় কমেছে। এর প্রভাব পড়েছে কাস্টমসের রাজস্ব আদায়ে।”
কাস্টমস বলছে, ডলার সংকটের কারণে সরকার আমদানি সীমিত করায় ক্রমাগত কমছে আমদানির পরিমাণ। ফলে কমে গেছে রাজস্ব আয়।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার মো. বদরুজ্জামান মুনশি গণমাধ্যমকে বলেন, রাজস্ব আদায় বেশি হয় এমন পণ্য গাড়ি, কসমেটিকস, ইলেকট্রনিক্স সহ বিলাসজাতীয় পণ্য আমদানি কমে যাওয়ায় রাজস্ব আদায় কমে গেছে।
অর্থবছরের বাকি দুই মাসে একই ধারা অব্যাহত থকলে সার্বিক প্রবৃদ্ধিও ঋণাত্বক হবে বলে আশংকা করছে কাস্টম সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৭৪ হাজার ২০৬ কোটি টাকা। আর জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রথম দশ মাসের লক্ষ্যমাত্রা ৬২,৬৪৭ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দশ মাসে রাজস্ব আদায় হয় ৪৮,৮১৫ কোটি টাকা।
অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২২.০৮ শতাংশ কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিলো ৪৮,০৬১ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের হাউসের তথ্য অনুযায়ী, আগষ্টে প্রবৃদ্ধি নেমে আসে ২৪.৬৭ শতাংশে। এরপর অক্টোবরে ৩.৯১ শতাংশ, নভেম্বরে ১৪.১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয় কাস্টমসে।