জালিয়াতির মাধ্যমে রপ্তানির ভুয়া এলসি খুলে অর্থপাচার, ৯ চালান আটক

রপ্তানির ভুয়া এলসি খুলে অর্থপাচার।
CPLUSTV
CTG NEWS
CPLUSTV
শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক: কাগজপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে পণ্য রপ্তানি করলেও বৈদেশিক মুদ্রা দেশে প্রত্যাবাসিত না হওয়ার গোপন সংবাদে অভিযান চালিয়ে ৯ চালানে ৭ কনটেইনার পণ্য আটক করেছে শুল্ক গোয়েন্দা। যার ওজন ১১৮ টন, ঘোষিত মূল্য ৩ কোটি টাকা। যার প্রকৃত মূল্য বেশি হবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. শাকিল খন্দকার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, টি শার্ট ও লেডিস ড্রেস রফতানির ঘোষণা থাকলেও কায়িক পরীক্ষায় বেবি ড্রেস, জিন্স প্যান্ট, শার্ট, লেগিন্স, শালসহ ঘোষণা বহির্ভূত অসংখ্য পণ্য পাওয়া গেছে। চালানগুলো মালয়েশিয়া, সুদান, ইউএই, ত্রিনিদাদ, টোবাগো নেওয়ার কথা ছিল।এসব রপ্তানি চালানের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এ ধরনের আরও কিছু রপ্তানিকারকের বিষয়ে গোপন সংবাদ থাকায় তদন্ত চলমান রয়েছে। সার্বিক অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের যুগ্ম পরিচালক মো. সাইফুর রহমানকে আহ্বায়ক করে ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সূত্র জানায়,গত ৩১ জানুয়ারি উত্তর পতেঙ্গার এসএপিএল (ওসিএল) কনটেইনার ডিপোতে এ অভিযান পরিচালনা করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের একটি টিম। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ঢাকার মোল্লার টেকের সাবিহা সাইকি ফ্যাশন নামের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ১৫টি বিল অব এক্সপোর্ট সংক্রান্ত দলিল পর্যালোচনায় জালিয়াতির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। ফলে চালানগুলো রপ্তানি কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করা হয়। এসব দলিল যাচাই করার জন্য অগ্রণী ব্যাংকে চিঠি দেওয়া হয়। এর জবাবে ব্যাংকটির প্রধান শাখা থেকে জানানো হয় সাবিহি সাইকি ফ্যাশন তাদের গ্রাহক নয় এবং বিল অব এক্সপোর্ট সংশ্লিষ্ট ইএক্সপিগুলো এ ব্যাংকের অন্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের নামে ইস্যু করা। এর পর গোয়েন্দা কর্মকর্তারা নিশ্চিত হন ভুয়া ইএক্সপি এবং এলসি কিংবা সেলস কন্ট্রাক্ট ব্যবহার করে পণ্য রপ্তানি করা হচ্ছিলো। যেহেতু জালিয়াতির মাধ্যমে রপ্তানি হয়েছে সেই কারণে এই চালানগুলোর বিপরীতে কোনো বৈদেশিক মুদ্রা বৈধ পন্থায় দেশে প্রত্যাবাসনের সুযোগ না থাকায় এক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং সংঘটিত হয়েছে। এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান শুল্ক গোয়েন্দাকে জানায়, তিনি এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন। এ বিষয়ে তিনি উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। অভিযানের পরপরই এ ডায়েরি (জিডি নম্বর ২৬৩৮, ৩১ জানুয়ারি ২০২৩) করা হয়েছিল।

এরপর চালানগুলোর কায়িক পরীক্ষার জন্য সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট লাইম্যাক্স শিপার্স লিমিটেডকে চিঠি দিলেও সহযোগিতা করেনি। প্রতিষ্ঠানটির ১৫টি চালানের মধ্যে ৯টি ডিপোতে পাওয়া যায়। বাকিগুলো বিদেশে চলে গেছে। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে একই রপ্তানিকারকের ৯৪টি চালানের খোঁজ মিলেছে। এর মধ্যে ৮৫টি বিদেশে চলে গেছে। যার পরিমাণ ৮৮২ মেট্রিক টন, ঘোষিত মূল্য ২২ কোটি টাকা।