সিপ্লাস ডেস্ক: বিএনপিকে নির্বাচনে নেওয়ার কৌশল বললেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা (আওয়ামী লীগ) বিদেশি প্রভুদের হতে পায়ে ধরে বলেন- বিএনপি নির্বাচনে আসলে সব সমস্যা সমাধান হয়। আপনারা ওদের হাতে পায়ে ধরার কী আছে? গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কাছে যান, তাকে মুক্তি দিন। সংসদ বিলুপ্ত করে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন এবং নির্বাচন কমিশন বাতিল করুন সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এসব কথা বলেন। ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে’ এই মানববন্ধন কর্মসূচি করে নাগরিক অধিকার ফোরাম।
সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রসঙ্গ টেনে আলাল বলেন, আজ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের নাগরিকদের জমা করা টাকার পরিমাণ এক বছরের ব্যবধানে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। এই টাকা কারা পাচার করেছে?
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২১ সালে সুইটজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঁ, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় আট হাজার দু’শ ৭৫ কোটি টাকা। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে এই অর্থের পরিমাণ ছিল পাঁচ হাজার তিন শ ৪৭ কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, এ টাকা কারা পাচার করেছেন তা আমার আপনার বলার দরকার নাই। পরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই বলেছেন কারা টাকা পাচার করেছেন। বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করেন, দেশের সরকারি আমলা ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্তরাই এই টাকা পাচার করেছেন।
আলাল বলেন, দেশের জনগণের প্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি জীবনে ২৩টি আসনে নির্বাচন করেছেন; সবকটিতেই তিনি জয়ী হয়েছেন। পরাজয় বলতে তার কোনো কিছু নেই। আর এই কারণেই এই অবৈধ সরকারের রোষানালে পড়েছেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা হলো গণবিরোধী কিছু পুলিশসহ কিছু কর্মকর্তা; বিএনপির জনপ্রিয়তা দেশের জনগণের দোয়া এবং সমর্থন। দেশের পূর্ব ও পশ্চিম উত্তর-দক্ষিণ সবদিক থেকে আওয়ামী লীগের তাসের ঘর ভেঙে পড়ছে উল্লেখ করে বিএনপি নেতা আলাল বলেন, আপনার (শেখ হাসিনা) গোপালগঞ্জ যেটাকে পারলে আপনি রাজধানী বানান; সেই গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। একদিকে গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয় অন্যদিকে বগুড়ায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। অর্থাৎ পূর্ব-পশ্চিম উত্তর-দক্ষিণ সবদিক থেকে আপনাদের তাসের ঘর ভেঙে পড়ছে।
সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, এক পদ্মা সেতু নিয়ে যে মাতামাতি করছেন কত মানুষের যে ক্ষতি করেছেন তা কী জানেন? দিন এমন থাকবে না। সময় থাকতে পালিয়ে যান। তা না হলে জনগণ পদ্মা নদীতে আপনাদের চুবাবে। আপনারা যেমন চুবাতে চেয়েছেন। সময় থাকতে মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেন। ’
মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ, কৃষকদলের এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।