নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার দীক্ষা’ প্রতিপাদ্য নিয়ে রোববার (মার্চ ১২) থেকে রাজধানীসহ সারা দেশে শুরু হয়েছে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ। এদিকে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৩ এবং শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ ও ঝরে পড়া রোধকল্পে চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে ৫৬ নং চরণদ্বীপ সিকদারীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মঙ্গলবার (মার্চ ১৪) যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হলো অভিভাবক সমাবেশ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সম্মানিত সহ-সভাপতি আবদুর রহমান। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সরোজ কান্তি দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সঞ্চালনায় ছিলেন কালাম ফেরদৌসী শান্তা।
উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মুক্তি চৌধুরী, মান্না মুহুরী, অপর্না বড়ুয়া, পম্পি দাশ, কান্তা চৌধুরী, রোকসানা আকতার ও এমএলএসএস মো: আব্দুল্লাহ সিকদার পারভেজ।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের শিক্ষক/শিক্ষিকা ও অভিভাবকগণ দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সম্মানিত সহ-সভাপতি আবদুর রহমান তার বক্তৃতায় বলেন, শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তথা সমাজ ও দেশের সম্পদে পরিণত হয়। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন ”মানুষের অন্তরের মানুষটি পরির্চযা করে খাঁটি মানুষ বানানোর প্রচেষ্টাই শিক্ষা”। শিক্ষার ফলে তার চিন্তা চেতনা ও কর্মে বিশাল মানের পরিবর্তন আসে। তার সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত হয়ে সমাজের উন্নয়নে নিজেকে দক্ষ ও সক্ষম করে তোলে। ফলে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বাঁচতে শেখে,বাঁচাতে শেখে ও ভালো মানুষ হতে শেখে। গুনগত শিক্ষায় বর্তমান সমাজ তথা দেশের অন্যতম চাওয়া। উত্তম শিক্ষার জন্য প্রয়োজন অনুকূল পরিবেশ। আর এই পরিবেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের। আমি মনে করি একটা গুনগত শিক্ষা তিনটা ধাপের উপর বিরাজমান যেমন,শিক্ষক, অভিভাবক ও ছাত্র এই তিন এর সমন্বয়ে শিক্ষার মান হয় পরিপূরক বা টেকসই। স্কুলের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থায় ২৪ ঘন্টায় মাত্র ৬ ঘন্টা শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের আই-ভিশনে থাকে আর বাকি ১৮ ঘন্টা থাকে অভিবাদকদের কাছে। সেক্ষেত্রে শিক্ষার সফলতা অনেকটাই অভিভাবকদের উপর নির্ভর করে। একজন দায়িত্বশীল অভিবাবক হিসেবে তার সন্তানের বিদ্যালয়ের প্রতিদিন অগ্রগতির খোঁজ খবর রাখা প্রয়োজন। শুধু তাই নয়;শিক্ষার্থীরা পরিস্কার- পরিচ্ছন্ন হয়ে বিদ্যালয়ে আসা,দুপুরের খাবার সাথে নিয়ে আসা সহ তার সার্বিক বিষয়ে অভিবাবককেই যত্নশীল হতে হবে। প্রত্যেক অভিভাবক সাপ্তাহে অনন্ত একদিন শিক্ষকদের নিকট তার সন্তানের বিষয়ে খোঁজ খবর নিবেন বা নেওয়া উচিৎ বলে মনে করছি। নিজের সন্তানকে পড়ালেখাসহ নৈতিক বিষয়ে তাগিদ দেওয়ার পাশাপাশি অন্যের সন্তানকেও অনুরূপ বিষয়ে উৎসাহী করে তুলতে হবে। সকল অভিভাবককে শিক্ষাথীর বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষার উন্নয়নে অভিভাবকদের সম্পৃক্ত ও সচেতন করে তোলাই মূখ্য বিষয়। শিক্ষকদের যেমন অভিভাবকদের পরামর্শ বা যুক্তিগুলো মন দিয়ে শুনতে হবে তেমনি অভিবাবকদেরও শিক্ষকদের পরামর্শ মেনে চলা উচিৎ বলে মনে করছি। কেননা অভিভাবক বিদ্যালয়ের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিদ্যালয়ের পড়াশোনার পরিবেশ উন্নয়নকল্পে তারা শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটা সুন্দর পরিবেশ তৈরি করে শিক্ষার গুনগত মান ক্রমাগত ভাবে আরো উচ্চ পর্যায়ে নিতে পারবে বলে আমি মনে করি।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সরোজ কান্তি দাশ অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে এবং সকল অভিভাবকদের মধ্যে টিফিনের বিতরণ করা হয়।