চট্টগ্রাম নগরীর রাজপথে রথের রশি টানলেন ভক্তরা

ছবি: সংগৃহীত
CPLUSTV
CTG NEWS
CPLUSTV
শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ  গত দুই বছর করোনার সংক্রমণের কারণে চট্টগ্রামের রাজপথে নামেনি রথ। তাই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এবারের রথযাত্রা পেয়েছে ভিন্ন রূপ। শ্রীজগন্নাথ দেব, বোন সুভদ্রা রাণী ও ভাই বলরাম এসেছেন জনারণ্যে, তাঁদের দর্শনে ভক্ত-দর্শনার্থীরাও নেমেছিলেন পথে। টেনেছেন রথের রশি।

শুক্রবার (১ জুলাই) আষাঢ়ের রথদ্বিতীয়া তিথিতে বিকাল সাড়ে ৩টার পর সুদৃশ্য রথে চড়িয়ে ত্রিদেবতা নিয়ে পথ পরিক্রমায় বাহির হন কয়েক হাজার ভক্ত, টেনেছেন রথের রশি, নিবেদন করেছেন অন্তরের প্রণাম।

কেন্দ্রীয় রথযাত্রা উৎসব উদযাপন কমিটির উদ্যোগে নগরের নন্দনকানন রথের পুকুর পাড় এলাকা থেকে শুরু হয় রথযাত্রা উৎসব। তুলসীধামের মোহন্ত শ্রীমৎ দেবদীপ পুরী মহারাজের পৌরহিত্যে উৎসব উদ্বোধন করেন চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাই-কমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন। আশীর্বাদক ছিলেন পাহাড়তলী কৈবল্যধামের মোহন্ত মহারাজ শ্রীমৎ কালীপদ ভট্টাচার্য্য। প্রধান অতিথি ছিলেন সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর।

কেন্দ্রীয় রথযাত্রা উৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি রঞ্জন প্রসাদ দাশগুপ্ত এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামদাশ ধর এর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন অধ্যাপক প্রণব মিত্র চৌধুরী, কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, শৈবাল দাশ সুমন, পুলক খাস্তগীর ও রুমকী সেনগুপ্ত, অনুপ বিশ্বাস, মো. সাহাবউদ্দিন।  শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন অর্থ সম্পাদক বিধান ধর, হিরন্ময় ধর। এছাড়া বিভিন্ন মঠ-মন্দিরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বক্তব্য দেন। সংবর্ধিত অতিথি ছিলেন ডা. বিনয় পাল। এসময় অতিথিদের কেন্দ্রীয় রথযাত্রা উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়। অতিথিরা তপোবন রথযাত্রা সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করেন।

রথযাত্রা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভারতীয় সহকারী হাই-কমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন বলেন, দুইশ বছরের প্রাচীন নন্দনকানন রথের পুকুর পাড় তুলসীধামের কেন্দ্রীয় রথযাত্রায় মানুষের মিলনমেলা দেখে আমি অভিভূত। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের আত্মার সম্পর্ক। ভূ-তাত্ত্বিক সীমানা আত্মার সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারে না। বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্ক কখনও ছিন্ন হবে না। সব ধর্ম-বর্ণের মানুষকে সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে।

সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, চট্টগ্রাম সম্প্রীতির অনন্য নজির গড়েছে। রথযাত্রা উৎসবে সবাই অংশগ্রহণ করছে। এখানে সব ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারছে। পুলিশ জনগণের বন্ধু, জনগণকে নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব পালন প্রার্থনার সমতুল্য।

এছাড়া চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলার মধ্যে অধিকাংশ থানা এলাকার মন্দির কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে  রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

চট্টগ্রামে ১৮শ খৃষ্টাব্দের পর রথযাত্রা উৎসবের প্রচলন শুরু হয়। শহরের নন্দনকাননে রথের পুকুর পাড় এলাকায় আষাঢ়ের রথদ্বিতীয়া তিথিতে বিভিন্ন মঠ-মন্দিরের রথ ছাড়াও আশপাশের উপজেলা থেকে রথগুলো এসে জমা হতো, বসতো মেলা। পুকুরে পুণ্যস্নান করতেন ভক্তরা। সবগুলো রথ পুকুর পাড়ে রাখা হতো বলে স্থানটিও সেই নামে পরিচিতি পায়।