ঘূর্ণিঝড় মোখা’র আচড় লাগেনি মহেশখালীতে,লবণ মাঠে নিহত ১

মহেশখালী প্রতিনিধি: অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ উপকূলীয় কয়েকটি এলাকা। তবে মহেশখালীতে  গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটিসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উপড়ে গেছে। কিন্তু মোখার আঘাতে তেমন বড় ধরনের আচড় লাগেনি দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে।

এদিকে উপজেলার হোয়ানকে ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে মোহাম্মদ রিদুয়ান (৩৬) নামে এক লবণ চাষীর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (১৪ মে) বেলা ৩ টার সময় তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন  হোয়ানক ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। নিহত রিদুয়ান স্থানীয় হোয়ানক ইউনিয়নের পশ্চিম কালাগাজি পাড়ার মৃত ফজল কাদের এর পূত্র।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখা চলাকালে উৎপাদিত লবণ গর্তে ঢুকিয়ে রাখার জন্য রিদুয়ান সহ আরও কয়েকজন গেলে বেলা ৩ টার সময় অতি বৃষ্টি ও বাতাসের কবলে পড়ে গর্তে পড়ে যায়।

সেখান থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা। আর ঠান্ডা জনিত কারণে অচেতনতায় মৃত্যু বরণ করেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে এই উপকূলীয় এলাকার মানুষের বড় বিপদের শঙ্কা কেটে গেছে। সেইসঙ্গে ঘূর্ণিঝড়টি কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। যা ক্ষতি হয়েছে, এর চেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে উপজেলা নিবার্হী অফিসার মোহাম্মদ ইয়াছিন।

রবিবার (১৪ মে) বিকাল ৩টার দিকে সেন্টমার্টিন উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় মোখা। তবে মহেশখালী উপকুলে সাগরের জোয়ারের পানির আচড়ে পড়েনি।

বঙ্গোপসগারে সৃষ্ট  ঘূর্ণিঝড় মোখা রবিবার সকাল ৯ টা থেকে ৩ টার মধ্যে কক্সবাজার উপকূলে  আঘাত হানার কথা থাকলেও একাংশের সেন্টমার্টিন দ্বীপে আঘাত আনে। তবে মহেশখালীতে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

জানা গেছে, মহেশখালীর ধলঘাটা, মাতারবাড়ী, ঘটিভাঙা -সোনাদিয়া সহ বিভিন্ন উপকূলীয় ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড়ের প্রস্তুতি উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানিয় এমপি আশেক উল্লাহ রফিক জনসাধারণের মধ্যে সতর্ক থাকার আহ্বান জানায়।

একারণে সাধারণ মানুষ সতর্কতার অবলম্বন হিসেবে অনেকেই নিরাপদ জায়গায় এবং আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নেয়। রবিবার সকাল থেকেই বিকাল ৪ টা পর্যন্ত দমকা হাওয়া আর কোথাও কোথাও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি অথবা মুষল ধারে বৃষ্টি হলেও সাগরের জোয়ারের পরিস্থিতি ছিল মোটামুটি স্বাভাবিক। সন্ধ্যার পর বাতাস আর বৃষ্টি থমকে গেলে উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র ও আত্মীয়স্বজনদেরবাড়ীসহ মাতারবাড়ীর আশ্রয় কেন্দ্র থেকে মানুষ নিজ ঘরে ফিরতে শুরু করেছে এমনটি জানিয়েছেন মাতারবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি জিএম ছমি উদ্দিন।

তিনি বলেন,‘বিকাল ৩টার দিকে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড়টি। শঙ্কায় ছিলাম এখন কেটে গেছে তবে আমার এলাকায় গাছ-পালা ক্ষতি হলেও ঘর-বাড়ির তেমন ক্ষতি হয়নি বলে জানান।

অপরদিকে মহেশখালী উপজেলার ধলঘাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান জানিয়েছেন,ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব তার এলাকায় পড়েনি। জোয়ারের পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।  সারাদিন বাতাসের সাথে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে রক্ষা করেছেন।

এদিকে দুর্যোগ চলাকালীন সময়ে মহেশখালীর প্রত্যন্ত গ্রামে স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে দুর্যোগ প্রবণ এলাকায় ছুটে যান মহেশখালী-কুতুবদিয়ার জাতীয় সংসদ আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক।

তিনি উপজেলার প্রত্যেকটি বাজারে গ্রামে অলি-গলি সরজমিনে ঘুরে ঘূর্ণিঝড় মোখা সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন এবং লোকজনকে সচেতন করে পরামর্শমুলক কথা বলেন।

উল্লেখ্য,কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে মহাবিপদ সংকেত থেকে নামিয়ে কক্সবাজার ৩নং সতর্কতা সংকেত জারী।

ক্যালেন্ডার
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
Scroll to Top