ঈদগাঁও’র তরুণ আলেম শোয়েব রশিদের রহস্যজনক মৃত্যু,পরিবারের দাবি হত্যা!

আলেম শোয়েব রশিদ (২৯)।
CPLUSTV
CTG NEWS
CPLUSTV
শেয়ার করুন

সেলিম উদ্দীন,ঈদগাঁও প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের বাসায় আকস্মিকভাবে মৃত্যু বরণ করেছে তরুণ আলেম শোয়েব রশিদ (২৯)। তবে লাশ উদ্ধার পরবর্তী সময় যতই গড়াচ্ছে মৃত্যু রহস্য ক্রমশ: ধুম্রজালের সৃষ্টি করছে।

শোয়েব রশিদ কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বাঁশকাটা গ্রামের মরহুম মওলানা রশিদ আহমদের পুত্র।

বৃহস্পতিবার সকালের দিকে কোন এক সময়ে তার মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করছে তার নিকটাত্মীয়রা। তবে তারা দুপুরের দিকে মৃত্যুর সংবাদ পায় বলে দাবি করেন।

শোয়েবের নিকটাত্মীয় দিদার জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরের পরে তারা শোয়েবের শ্বশুর পক্ষের লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারেন চট্টগ্রামের আতুরার ডিপো কাশেম বিল্ডিংস্থ শোয়েব তার ভাড়া বাসায় আত্মহত্যা করেছেন। এ সংবাদ পেয়ে তারা শোয়েবের স্ত্রী ফায়েকা খানমের সাথে যোগাযোগ করলে সেও বাথরুমে তার স্বামী আত্মহত্যা করেছে বলে জানায়। এরপর তারা স্ত্রীকে লাশটি তারা না পৌছা পর্যন্ত বাসায় রাখার জন্য বলেন। কিন্তু স্ত্রী তাদের কথা না শুনে লাশ নিয়ে কক্সবাজারের উদ্দেশ্য রওয়ানা দেয়। পথিমধ্যে চকরিয়া পর্যন্ত লাশের গাড়ি পৌঁছলে তারা তার সাথে যোগাযোগ করে লাশসহ গাড়িটি নিয়ে পুনরায় চট্টগ্রাম মেডিকেলের উদ্দেশ্য রওয়ানা দেন। স্ত্রী কর্তৃক মৃত্যুর সংবাদ তাদের না দেয়া এবং তাদের কথা না শুনে লাশ নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ায় মৃত্যু নিয়ে তাদের মনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়।

পরে পরিবারের সদস্যরা শোয়েব কিভাবে, কোথায়, কিসের সহায়তায় আত্মাহত্যা করেছে তা জানতে বাসায় যান। স্ত্রী’র দাবি অনুযায়ী শোয়েব যে স্থানে, যেভাবে আত্মহত্যা করেছে বলে বর্ণনা করেছে, তাতে শোয়েবের মৃত্যু রহস্য তাদের কাছে আরো বিস্ময়কর মনে হওয়ায় তারা চট্টগ্রামস্থ বায়েজিদ থানার শরণাপন্ন হন এবং থানার একদল পুলিশ হাসপাতাল পৌঁছে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়না তদন্ত সম্পন্নের প্রক্রিয়া করেন।

জানা গেছে, ব্যবসায়ীক কারণে শোয়েব পরিবার নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে ভাড়া বাসায় থাকত। তার একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। স্ত্রী’র পৈত্রিক এলাকাও একই উপজেলায় বলে জানান স্বজনরা। বিগত একমাস পূর্বে শোয়েবের পিতাও মৃত্যুবরণ করেন। শোয়েবের আত্মহত্যার সংবাদ তার পরিবার, স্বজন ও এলাকাবাসী কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেনা। কারণ তাদের পুরো পরিবার অত্যন্ত ধর্মভীরু। সে কোনভাবেই আত্মহত্যা করতে পারেনা বলে তাদের দাবি। সে কি আত্মহত্যা করেছে, না পরিকল্পিত হত্যার শিকার হয়েছে তা তদন্তপূর্বক প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানান তারা।

বায়েজিদ থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ হোসাইন জানান, উল্লেখিত স্থানে শোয়েব নামের একজন মওলানা আত্মহত্যা করেছে সংবাদ পেয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, লাশটি হাসপাতালে নিয়েছে। ওখান থেকে আবার লাশটি কক্সবাজারের উদ্দেশ্য নিয়ে যাচ্ছে জেনে লাশটাকে পুনরায় চট্টগ্রাম নিয়ে আসতে বলি এবং চমেক হাসপাতালেই পুলিশ লাশ পান। শুক্রবার দুপুরে  লাশটি চমেক হাসপাতালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য বলা যাচ্ছে না। তবে স্ত্রী তার স্বামী আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করেছে।