আনোয়ারায় ইউপি উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীকে হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

আনোয়ারায় ইউপি উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজিম উদ্দিন সুজন (মোটরসাইকেল), মোহাম্মদ আলী (আনারস), হাসান জিয়াউল ইসলাম (ঘোড়া), শেখ নাজিম উদ্দিন (টেলিফোন) ও আবদুল মালেক মানিক (চশমা)
CPLUSTV
CTG NEWS
CPLUSTV
শেয়ার করুন

আনোয়ারা প্রতিনিধি : আনোয়ারা উপজেলার পরৈকোড়া ইউপি উপ-নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিনে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজিম উদ্দিন সুজন সহ চার প্রার্থীকে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।

অন্যদিকে গতকাল (সোমবার) বহিরাগত সন্ত্রাসী কর্তৃক স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীদের উপর হামলা, মামলা, ভোট কেন্দ্র দখল করার হুমকির প্রতিবাদ এবং আগামীকাল সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণ ও বহিরাগত নেতাকর্মী প্রবেশ নিষেধের উপর জোরদারের দাবী নিয়ে মঙ্গলবার (১৪ জুন) দুপুরে নগরীর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনও করেন পরৈকোড়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজিম উদ্দিন সুজন (মোটরসাইকেল), মোহাম্মদ আলী (আনারস), হাসান জিয়াউল ইসলাম (ঘোড়া), শেখ নাজিম উদ্দিন (টেলিফোন) ও আবদুল মালেক মানিক (চশমা)।

সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, গতকাল (সোমবার) বিকাল সাড়ে ৪টায় পরৈকোড়া ইউনিয়নের লালাবাজারে আছরের নামাজ আদায় করে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নাজিম উদ্দিন সুজন প্রচারণার জন্য এলাকায় গেলে আওয়ামীলীগ প্রার্থী আজিজুল হক বাবুল, আনোয়ারা সদর ইউপি চেয়ারম্যান অসীম কুমার দেব, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মামুন, দক্ষিণ জেলা শিশু কিশোর মেলার সভাপতি আলমগীর, ডা. নীলকান্ত বিষু, শাহাদাত, ডেবিট, সাইফুল ইসলামসহ বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করেন এবং মারধর করেন নাজিম উদ্দিন সুজনকে। এসময় তালসরা গ্রামের মোহাম্মদ শাহজাহান, সাবেক মেম্বার সালামত আলী, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আহমদ নবীর উপরও হামলা চালিয়ে তাদেরকে আহত করে। আবুল কালামের নেতৃত্বে চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবুলের সন্ত্রাসী বাহিনীরা তাদের উপর হামলা চালায়।

একি সময়ে কালীগঞ্জ বাজারে চেয়ারম্যান প্রার্থী হাসান জিয়াউল ইসালামের নির্বাচনী প্রচারণার সময় নৌকা প্রার্থী বাবুলের সন্ত্রাসীরাও হামলা চালায়। ওই হামলায় মামুরখাইন গ্রামের জাহাঙ্গীর, বোরহান, আবছার আহত হন। এই ঘটনায় সিএনজি মাইক ভাঙচুর করে। মাহতা রাস্তার মাথায় মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর আনারস প্রতীকের প্রচারণাকালে সিএনজি, মাইক ভাঙচুর ও সমর্থকদের মারধর করে।

বক্তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে আওয়ামীলীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আজিজুল হক চৌধুরী বাবুলের সন্ত্রাসী বাহিনীরা প্রচার-প্রচারণাও বাঁধা দেয়। প্রতিদিন ১০ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরাও তার এই সন্ত্রাসী কাজে সহযোগিতা করছেন বলে দাবী করেন তারা।

তাঁরা আরও বলেন, আগামীকাল ভোট গ্রহণে ভোট কেন্দ্র দখল করার হুমকি দিচ্ছে নৌকার প্রার্থীর লোকজন। ভোট কেন্দ্রে বহিরাগত কোনো লোকজন ও বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, নেতাকর্মীরা এসে প্রভাব বিস্তার না করার উপর জোরদারের দাবি জানায়। এছাড়া ভোট কেন্দ্র দখলমুক্ত, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে জানতে নৌকা প্রতীকের আ. লীগ দলীয় প্রার্থী আজিজুল হক বাবুলকে ফোন দেওয়া হলে তাঁর পক্ষে কর্মী আলমগীর তালুকদার বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রচার প্রচারণার সময় কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থীকে বাঁধা বা হামলা করা হয়নি। নৌকার প্রার্থীর জনপ্রিয়তা দেখে ভয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বানোয়াট অভিযোগ এনেছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের করা, বহিরাগত লোকজন এসে নির্বাচনী প্রভাব বিস্তার ও প্রচারণার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বহিরাগত বলতে কিছু নেই। সব আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও চেয়ারম্যানরা। তাঁরা নৌকার পক্ষে প্রচার প্রচারণা করতে এসেছে।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ’নৌকার পক্ষে কাজ করতে আসা আনোয়ারার বিভিন্ন চেয়ারম্যান ও নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারধর ও গাড়ি ভাংচুর করেছে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীবাহিনীরা। এতে কয়েকজন গুরুতর আহত হয়ে মেডিকেলে চিকিৎসাধীনে আছে।’

এর আগে গত সোমবার পরৈকোড়া ছত্তার হাট, মাহাতা ও মামুরখাইন এলাকায় এ ঘটনায় বৈরাগ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নোয়াব আলী, চাতরীর সাবেক চেয়ারম্যান ইয়াছিন হিরু, যুবলীগ নেতা জালাল ও পুলিশ কনস্টেবল মোহাম্মদ কামালসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহত কয়েকজনকে উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় আনোয়ারা থানায় চারটি মামলা হয়েছে।

আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি এস এম দিদারুল ইসলাম সিকদার জানান, ’সোমবার নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এসময় আনোয়ারা থানার একজন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়। এ ঘটনায় একটি পুলিশের করা মামলা এবং ইউনিয়নের তিন জায়গায় হামলার ঘটনায় মোট চারটি মামলায় ১৪ জনকে আটক করে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, আগামীকাল ভোট গ্রহণে সহিংসতা এড়াতে এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণের জন্য আনোয়ারা থানা পুলিশের পক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।