আগামী নির্বাচন নিয়ে জনগণের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রয়েছে: আমীর খসরু

ছবি: সংগৃহীত
CPLUSTV
CTG NEWS
CPLUSTV
শেয়ার করুন

সিপ্লাস ডেস্ক: ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে যারা নির্বাচনে যাওয়ার চিন্তা করছেন তাদের ওপরে জনগণ তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, একই সঙ্গে সরকারের মধ্যে থেকে যারা এ কার্যক্রম করার চেষ্টা করছেন তাদেরসহ নির্বাচন কমিশনের ওপরও জনগণ তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রয়েছে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ যে ভোট চুরির মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল করে, এটার আবার একটা উচ্ছিষ্টভোগী সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার (১৫ জুন) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পল্লীচিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, এরা (সরকার) যে মাল চুরি করে সে মালের ভাগ নেওয়ার জন্য কিছু উচ্ছিষ্টভোগী সৃষ্টি হয়েছে দেশে। আমি তাদের প্রতি বলতে চাই- সব জাতি তাদের ওপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রেখেছে। এরা বাংলাদেশের জনগণের বিপক্ষে অবস্থান করছে। এই লোকগুলো কারা? এরা কোন ধরনের রাজনীতিবিদ? কোন দল? এদের উদ্দেশ্য কী? দেশে এবং দেশের বাইর থেকে তাদের ওপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছে। আমি তাদের অনুরোধ করবো, এখনো সময় আছে জনগণের পক্ষে অবস্থান নিন।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আগামী মাসগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং আন্দোলনকে কীভাবে সফল করা যায়, আপনাদের বন্ধুবান্ধব আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সবাইকে নিয়ে আমরা যেন আন্দোলনকে সম্পৃক্ত করতে পারি সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অসুস্থ নেত্রীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার বিষয়টি কিন্তু মানুষের কাছে কেস স্টাডি হয়ে থাকবে। যার যার অবস্থান থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। মুক্তি সংগ্রাম কারও একার না, দেশের ১৮ কোটি মানুষের। বিএনপির ৩৬ লাখ নেতাকর্মীর নামে মামলা। এখন দেশের কোর্টের মধ্যে ৯০ শতাংশ বিএনপির মানুষের আনাগোনা।

তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষ দুই ভাগ হয়ে গেছে। একটা হলো কর্তৃত্ববাদী সরকার, আরেকটি হচ্ছে গণতন্ত্রের পক্ষে মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের পক্ষে। বিএনপির অবস্থান জনগণের পক্ষে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, গ্রাম অঞ্চলের শিক্ষা ও চিকিৎসা একদম ভেঙে পড়ে গেছে। মানুষের সুস্বাস্থ্য চিকিৎসা, শিক্ষার না থাকে তাহলে পদ্মা সেতু দিয়ে তারা (সরকার) কী করবে? পদ্মা সেতুর ঝলমলে আলো তাদের কোনো কাজে আসবে না।

রিজভী বলেন, অর্থনীতিবিদরা বলছেন- যে বাজেট দেওয়া হয়েছে ও মুদ্রাস্ফীতি যে হারে বাড়ছে এতে দেশে উদ্যোক্তা বাড়বে না। যেভাবে অর্থনীতি ধ্বংস দিকে যাচ্ছে, মুদ্রাস্ফীতি হচ্ছে, দেশে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে, যদিও করোনার আগে থেকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বেকারত্বের হার বাংলাদেশে বেশি। এই অবস্থাতে বেকারত্বর সংখ্যা বাড়বে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এত টাকা বাজেট দিয়েছে অথচ স্বাস্থ্য খাতে বাজেট আগের মতো। গত বছর যা ছিল এবারও তাই। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেবেন না, বানাবেন পদ্মা সেতু, এতে দেশের বেকারত্ব কমবে? স্বাস্থ্যসেবা বাড়বে পাবে না। এমনিতেই স্বাস্থ্যখাত ধ্বংস করে ফেলেছেন। এগুলো থেকে বোঝা যায় আপনি জনগণের সরকার নয়। আপনি তো দিনের ভোট রাতে করে সরকার হয়েছেন। জোর করে ক্ষমতায় বসেছে আছেন।

‘আজ কুমিল্লা নির্বাচন হচ্ছে। যেটা বিএনপি আগেই প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রত্যাখ্যানের যে বিষয়গুলো বলা হয়েছে তা প্রমাণিত। সকালে অনলাইন গণমাধ্যমগুলোতে দেখলাম বিভিন্ন বুথে পাতলা কাপড় দেওয়া হয়েছে। যেন বাহির থেকে দেখা যায়, কে কোথায় ভোট দিলো। কেউ যদি নৌকা মার্কা ছাড়া অন্য কোথাও ভোট দেয়, তাকে বাইরে এসে হুমকি দেবে। তাহলে বোঝা যাচ্ছে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন কেমন হবে।’

তিনি বলেন, এ নির্বাচনে শেখ হাসিনা যাকে বলে দেবেন সে ব্যক্তি জয়ী হবেন। কোনো কোনো জায়গায় কাকে জয়ী করতে হবে তা তিনি বলে দেবেন, আর নির্বাচন কমিশন তাই করবে। ‘বিষাক্ত খাঁচার ভেতরে ভয়ংকর জন্তুর সঙ্গে মানুষ রেখে বিশ্বাস করা, সে মানুষ বেঁচে থাকবেন’ আর শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বিশ্বাস করা একই কথা।

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস এম মারুফ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক শামিমুর রহমান শামিম, কেন্দ্রীয় নেতা শাহজান মিয়া সম্রাট, কৃষকদলের যুগ্ম সম্পাদক কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ, অ্যাবের নেতা কৃষিবিদ ছানোয়ার হোসেন প্রমুখ।