সিপ্লাস ডেস্ক: চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাস শেষে সরকারের ব্যাংক খাত থেকে ঋণ বেড়েছে মোট ১৮ হাজার ৩২৩ কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি মেটাতে সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক খাত থেকে গত অক্টোবর মাসে সরকারের ঋণ বেড়েছে ৫ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা।
এ নিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাস শেষে সরকারের ব্যাংক খাত থেকে ঋণ বেড়েছে মোট ১৮ হাজার ৩২৩ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, অক্টোবর মাস শেষে সরকারের ব্যাংক খাত থেকে ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৮ হাজার ৫০৮ কোটি টাকা। অবশ্য সেপ্টেম্বরের তুলনায় ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কমেছে সরকারের। সেপ্টেম্বরে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছিল। এই মাস শেষে ঋণের স্থিতি ছিল ২ লাখ ৮২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা।
২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক খাত থেকে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার টার্গেট ঠিক করা হয়েছিল। অক্টোবর শেষে সরকার এই টার্গেটের ১৭.২৩ শতাংশ ঋণ নিয়েছে এই খাত থেকে। গত ১ বছরে সরকারের ব্যাংক খাতে নেওয়া লোনের ৮৪ শতাংশই নেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে থেকে। বাকি ১৬ শতাংশ এসেছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে গত এক বছরে সরকার ব্যাংক খাত থেকে মোট ঋণ নিয়েছে ৭৬ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। যার মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নিয়েছে ৬৪ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা এবং অন্য বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে নিয়েছে ১২ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, সরকার ঘাটতি বাজেট মেটাতে ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। ঋণের অধিকাংশই বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটে ব্যয় হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এমনিতেই ব্যাংক খাত লিকুইডিটি নিয়ে চাপে আছে। এর ওপর সরকারের এই ঋণ চাপ আরও বাড়বে। সরকারের এই মুহূর্তে উচিত হবে, মেগা যেসব প্রজেক্টে বড় অঙ্কের খরচ হয়, সেগুলো আপাতত বন্ধ রাখা। অবশ্যই আমাদের এখন ব্যয় সংকোচনে যেতে হবে।’
চলতি অর্থবছরে নন-ব্যাংকিং খাত থেকে ৪০,০০১ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছিল সরকার। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, এই খাত থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ঋণ নেওয়া হয়েছে ৩ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের নিট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩৩০ কোটি টাকা, যা অর্থবছরের ৩৫ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার ১ শতাংশেরও কম।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে ২১ হাজার ৫১১ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে এবং আগের ঋণের ২১ হাজার ১৮০ কোটি টাকা শোধ করেছে।
সঞ্চয়পত্রের সুদের হার বাড়ানো উচিত উলেস্নখ করে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এই জায়গায় সুদের হার বাড়ানো উচিত। মুদ্রাস্ফীতিসহ নানা কারণে সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ডিপোজিট এখন অনেক কমে গেছে।’