মাঠে থাকবে উপপুলিশ কমিশনার ও ম্যাজিস্ট্রেট
প্রতিদিন কোথাও না কোথাও সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণহানি তো ঘটছেই, পাশাপাশি পঙ্গুত্ববরণ করছে বহু মানুষ। সড়কে প্রাণঘাতী এই নৈরাজ্য ঠেকাতে এবং শৃঙ্খলা ফেরাতে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কতৃপক্ষ চট্টগ্রাম সার্কেল রয়েছে তৎপর। চলতি সেপ্টেম্বর মাসে মাঠে নামবে উপপুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে ট্রাফিকের আভিযানিক দল । পাশাপাশি বহাল থাকবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালত ।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কতৃপক্ষ হিসাবে দেশে যানবাহনের সংখ্যা প্রায় ৩৩ লাখ। এর মধ্যে চালকের লাইসেন্স আছে ১৮ লাখ। বাকী ১৫ লাখ চলছে লাইসেন্সবিহীন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের চলতি বছরের আগস্ট মাসে ২৪২৪৫ টি গাড়ীর বিরুদ্ধে মামলা করে । বিভিন্ন ধরণের যানবাহন আটক করে ২৫৭৫টি, জরিমানা আদায় করেছেন ৮৬ লক্ষ ৫৫ হাজার ৮শত টাকা ।
অন্যদিকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কতৃপক্ষ চট্টগ্রাম সার্কেলে হিসাব অনুযায়ী চলতি বছরের আগস্ট মাসে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সমন্বিত জরিমানা করেছেন ৩ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা, মামলা হয়েছে ১০৪টি, কাগজপত্র জব্দ করেছে ৩৪ টি গাড়ির, ডাম্পিংয়ে পাঠিয়েছে ২ টি গাড়ি।
এত জরিমানা ও শাস্তির পরও সড়কে আসেনি কাঙ্খিত শৃঙ্খলা। এবার সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে আরো কঠোর হতে যাচ্ছে দেখভালের দায়িত্বে নিয়োজিত কতৃপক্ষ।
নিরাপদ সড়ক চাই চট্টগ্রাম মহনগরীর সাধারণ সম্পাদক শফিক আহমেদ সজীব সিপ্লাসকে বলেন, নগরী এবং নগরীর বাইরে অনকাঙ্খিতভাবে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। প্রশাসনের জরিমানার পাশাপাশি চালকদেরও সচেতন হতে হবে । আইন মানার সংস্কৃতিই পারে সড়কে শৃঙ্খলতা ফেরাতে বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ পরিষদের মহাসচিব লুৎফুল আজম সিপ্লাসকে বলেন, সড়কে বেপরোয়া গতির নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা আনার কোন চেষ্টা দেখিনা। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ঘুষ প্রথা বন্ধ করে স্ব স্ব ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত সকলকে এক সাথে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারশন আঞ্চলিক কমিটি’র সভাপতি মোহাম্মদু মূছা সিপ্লাসকে বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে মালিক, শ্রমিক ও যাত্রী সবাইকে সচেতন হতে হবে। বর্তমানে যে হারে মোটর সাইকেল ও তিন চাকার অটোরিক্সর অপ্রতিরোধ্য চলাচল, সেটাকে নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনতে হবে। শুধু চালক কিংবা গাড়ি শ্রমিকদের উপর দোষ চাপিয়ে, শাস্তি দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না। স্ব স্ব ক্ষেত্রে সবাইকে সচেতন হতে হবে। তাহলে হয়তো সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে।
বিআরটিএ চট্টগ্রাম সার্কেলের উপপরিচালক মো. শহীদুল্লাহ্ সিপ্লাসকে বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা কার্যক্রম চলছে। সরকারের সব সংস্থা চালক, যাত্রী ও পথচারীরাসহ সবাই একযোগে সচেতনভাবে কাজ করলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। সড়কে শৃঙ্খলা না ফেরা পর্যন্ত কোন ছাড় নেই বলেও জানান তিনি।
চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) হারুনুর রশিদ হাযারী সিপ্লাসকে বলেন,সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে আমরা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সর্বোচ্ছ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জনসাধারণ যদি সতর্কভাবে চলাচল করে এবং চালকরা যদি যানবাহন চালনায় সতর্কতা অবলম্বন করে তাহলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে। আমি দুই একদিনের মধ্যে মাঠে থেকে শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ শুরু করব।
তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন যদি সড়কে অটো সিগন্যালের ব্যবস্থা করে পাশাপাশি বিভিন্ন পয়েন্টে ফুটওভার ব্রীজ করে ,তাহলে শতভাগ না পারি হয়তো জনসাধারণকে কাছাকাছি আইন মানাতে পারব। সর্বোপরি সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতায় পারে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ।