বৃষ্টিমুখর শেষ দিনে জয়ের জন্য কেবল ৭০ মিনিট সময় পেয়েছিল আফগানিস্তান। অধিনায়ক রশিদ খানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে সেটুকু সময়ই যথেষ্ট হলো। বাংলাদেশ পেল বিব্রতকর এক হারের তেতো স্বাদ।
অবিস্মরণীয় জয়
শেষ দিনের প্রায় পুরোটাই ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। আফগানদের আশাও ছিল প্রায় ভেসে যাওয়ার জোগাড়। শেষ বিকেলে খানিকটা সুযোগ দিল প্রকৃতি। আফগানরা সেটুকুই লুফে নিল। ২২৪ রানে হারাল বাংলাদেশকে।
ম্যাচের শেষ দুই দিনে বারবার হানা দিয়েছে বৃষ্টি। তার পরও আফগানরা বের করে নিয়েছে জয়ের পথ। শেষ বিকেলে শেষ সময়ে অসাধারণ মানসিক দৃঢ়তা ও স্কিলের প্রমাণ রেখে বের করে নিয়েছে ম্যাচ।
বৃষ্টি বিরতির পর যখন শুরু হলো ৭০ মিনটের চ্যালেঞ্জ, অবিশ্বাস্য বাজে এক শটে প্রথম বলেই ফিরেছিলেন সাকিব। বাংলাদেশের সম্ভাবনার কবর খোঁড়া শুরু ওখানেই। শেষ পর্যন্ত লড়াই করা সৌম্য সরকারও পারেননি দলকে উদ্ধার করতে।
মাত্র তৃতীয় টেস্টেই আফগানদের এটি দ্বিতীয় জয়। টেস্ট ইতিহাসে ২ জয় পেতে ৩ ম্যাচ লেগেছিল কেবল আর অস্ট্রেলিয়ার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:আফগানিস্তান ১ম ইনিংস: ৩৪২বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২০৫আফগানিস্তান ২য় ইনিংস: ২৬০বাংলাদেশ ২য় ইনিংস:(লক্ষ্য ৩৯৮, আগের দিন ১৩৬/৬) ৬১.৪ ওভারে ১৭৩ (সাকিব ৪৪,সৌম্য ২, মিরাজ ১৫, তাইজুল ০, নাঈশ ১*; ইয়ামিন ৪-১-১৪-০, নবি ২০-৫-৩৯-১, রশিদ ২১.৪-৬-৪৯-৬, জহির ১৫-০-৫৯-৩, কাইস ১-০-৬-০)। |
পারলেন না সৌম্য
শেষ স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার পারলেন না ম্যাচ বাঁচাতে। বাংলাদেশের শেষ উইকেট তুলে নিয়ে আফগানিস্তানকে অসাধারণ এক জয় এনে দিলেন রশিদ খান।
লেগ-মিডলে থাকা বল সামনের পায়ে ডিফেন্স করেছিলেন সৌম্য। বল রাখতে পারেননি নিচে। শর্ট লেগে বল যায় ইব্রাহিম জাদরানের হাতে।
১৫ রানে আউট হলেন সৌম্য। দিনের সম্ভাব্য ৩.২ ওভার বাকি রেখে ম্যাচ জিতল আফগানিস্তান।
বৃষ্টি বিরতির পর বাংলাদেশের ৪ উইকেটের ৩টিই নিলেন রশিদ। ইনিংসে নিলেন ৪৯ রানে ৬ উইকেট। ম্যাচে ১১ উইকেট।
রশিদের ইতিহাস
তাইজুলের উইকেট নিয়ে ইনিংসে ৫ম শিকার ধরলেন রশিদ। প্রথম ইনিংসেও নিয়েছিলেন তিনি ৫ উইকেট। নেতৃত্বের অভিষেকেই ১০ উইকেট!
১০ উইকেটের সঙ্গে ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ফিফটিও করেছিলেন রশিদ। টেস্ট নেতৃত্বের অভিষেকে এই কীর্তি নেই আর কারও।
ভুল সিদ্ধান্তে তাইজুলের বিদায়
আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের শিকার হয়ে আউট হলেন তাইজুল ইসলাম। জয়ের আরেকটু কাছে এগোলো আফগানিস্তান।
রশিদ খানের বল ডিফেন্স করেছিলেন তাইজুল। ব্যাট আর পা ছিল কাছাকাছি। ব্যাটের কানায় লেগে বল লাগে পায়ে। আফগানদের জোরালো আবেদনে বেশ কিছুটা সময় নিয়ে আঙুল তুলে দেন অভিষিক্ত আম্পায়ার পল উইলসন।
খানিক আগেই বাংলাদেশের রিভিউ শেষ হয়ে গেছে মিরাজের আউটে। তাইজুলের সুযোগ ছিল না রিভিউ নেওয়ার। জিততে আফগানদের প্রয়োজন আর কেবল ১টি উইকেট।
পারলেন না মিরাজ
একবার জীবন পেয়েও বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না মেহেদী হাসান মিরাজ। তাকে ফেরালেন দুর্দান্ত বোলিং করতে থাকা রশিদ খান।
সামনে পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করেছিলেন মিরাজ। ব্যাট পেতে দিয়েছিলেন টার্ন করবে। পড়তে পারেননি গুগলি। বল লাগে পায়ে। আউট দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েছিলেন মিরাজ। কিন্তু বল লাগছিল স্টাম্পে।
মিরাজের পাশাপাশি একটি রিভিউও হারাল বাংলাদেশ। দিনের খেলার বাকি সম্ভাব্য ৯.৩ ওভার।
বেঁচে গেলেন মিরাজ
আরেকটি উইকেটের বড় সুযোগ হাতছাড়া করল আফগানিস্তান। ক্যাচ দিয়ে বেঁচে গেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
লেগ-মিডলে পিচ করা বলে ফ্লিক করার চেষ্টা করেছিলেন মিরাজ। বল তার ব্যাটের কানায় লেগে প্যাডে লেগে যায় শর্ট লেগের দিকে। কিন্তু হাতে জমাতে পারেননি ফিল্ডার।
৬ রানে বাঁচলেন মিরাজ। দিনের খেলার তখন বাকি অন্তত ১২ ওভার।
শুরু হতেই শেষ সাকিব
শেষ ৭০ মিনিটের চ্যালেঞ্জে খেলা শুরু হতেই শেষ হয়ে গেল সাকিব আল হাসানের ইনিংস। বাংলাদেশ অধিনায়ক ফিরলেন ব্যাখ্যাতীত এক শট খেলে।
বৃষ্টির পর চ্যালেঞ্জ যখন কেবল ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট টিকে থাকার, খেলা শুরুর পর প্রথম বলেই সাকিব লড়াইয়ে হার মেনে এলেন অনেক বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে।
চায়নাম্যান বোলার জহির খানের বলটি ছিল শর্ট, অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে। ছেড়ে দেওয়া যায় অনায়াসেই। সাকিব চাইলেন কাট করতে। ব্যাটের কানায় লেগে বল কিপারের গ্লাভসে। উল্লাসে মাতল আফগানরা।
৫৪ বলে ৪৪ করে দলকে মহাবিপদে ঠেলে ফিরলেন সাকিব। বাংলাদেশের রান ৭ উইকেটে ১৪৩। জিততে আফগানদের প্রয়োজন ৩ উইকেট।শেষ সময়ের চ্যালেঞ্জ
ঘড়ির কাঁটা তখন ৪টা ছুঁয়েছে। মাঠের কাভার সরানো হয়নি পুরোপুরি। কিন্তু আফগান ক্রিকেটাররা একদম প্রস্তুত হয়ে মাঠে নেমে গেছে তখনই! খেলতে তারা এতটাই মরিয়া।
জয়ের চেষ্টা করার কিছুটা সুযোগ তারা পাচ্ছে। বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে শুরু হবে ম্যাচ। আলো বিঘ্ন না ঘটালে চলবে ৫টা ৩০ পর্যন্ত। অন্তত ১৯ ওভার খেলা চালানোর চেষ্টা করা হবে।
থেমেছে বৃষ্টি
আফগানদের আশা খানিকটা ফিরিয়ে থেমেছে বৃষ্টি। দুপুর সোয়া ৩টার দিকে শুরু হয়েছে সুপার সপার দিয়ে উইকেটের কাভার থেকে পানি শুষে নেওয়ার কাজ।
চা বিরতি
বৃষ্টি বিরতি হয়েই আছে ম্যাচে। আনুষ্ঠানিকতার জন্য তবু চা বিরতির ঘোষণা এলো দুপুরে পৌনে ৩টায় । বৃষ্টির বেগ কিছুটা কমেছে। তবে থামাথামির নাম নেই। মাঠের নানা জায়গায় জমে গেছে পানি।
বেড়েছে বৃষ্টির বেগ
সময়ের সঙ্গে বাড়ছে বৃষ্টির তীব্রতা। দুপুর ১টা ২০ মিনিটের যে চিত্র, সকাল থেকে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টির বেগ এখনই। একটু দূরের কিছুও চোখে পড়ছে না বৃষ্টির কারণে। একটু একটু করে ভেসে যাচ্ছে আফগানদের জয়ের স্বপ্ন।
খেলা শুরুর পর আবার বৃষ্টি
দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান ও সৌম্য সরকার শুরু করেছিলেন ম্যাচ বাঁচানোর লড়াই। উজ্জীবিত আফগানরা নেমেছিল জয়ের লড়াইয়ে। কিন্তু আবার বাঁধ সাধল বৃষ্টি।
মাত্র ১৩ বল খেলা হওয়ার পরই বৃষ্টি নেমেছে মুষলধারে। আকাশও ঢেকে গেছে ঘন কালো মেঘে। আফগানদের জয়ের স্বপ্নে লেগেছে বড় চোট।
এই ১৩ বলে বাংলাদেশ করেছে ৭ রান। দলের রান ৬ উইকেটে ১৪৩। ৪৪ রানে অপরাজিত সাকিব, সৌম্য ২।
খেলা শুরুর অপেক্ষা
মাঠের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা দারুণ। বৃষ্টি থামার পর তাই খুব বেশি দেরি হচ্ছে না খেলা শুরু হতে। মাঠ পরিদর্শনের পর আম্পায়াররা জানালেন, খেলা শুরু হবে দুপুর একটায়।
এই সময়েই খেলা শুরু হলে চেষ্টা করা হবে অন্তত ৬৩ ওভার খেলা চালানোর।
সরানো হচ্ছে কাভার
দুপুর ১২টায় নামা বৃষ্টি থেমে গেছে মিনিট পনের পরই। আরেক দফায় তাই শুরু হয়েছে উইকেটের কাভার সরানো ও মাঠ শুকানোর কাজ।
বৃষ্টি ফিরল আবার
স্টেডিয়ামের বড় পর্দায় কেবলই লাঞ্চের ঘোষণা হয়েছে। সুপার সপার দিয়ে উইকেটের কাভারের ওপরের পানি সরানো হয়েছে। কাভার সরানোও শুরু হয়েছিল। তখনই আবার নামল বৃষ্টি। আবার উইকেট ঢেকে রাখা হলো কাভারে।
ভেসে গেল প্রথম সেশন
প্রথম সেশনে যে খেলা হবে না, সেটি অনুমিত ছিল সকাল থেকেই। হলোও তাই। শেষ দিন লাঞ্চ বিরতির আগে খেলা শুরু হওয়ার অবস্থাও সৃষ্টি হয়নি।
মাঠ শুকানোর কাজ শুরু
বৃষ্টি পুরোপুরিই থেমে গেছে। রোদও উঠেছে বেশ। দিনে প্রথমবারের মতো মাঠ শুকানোর কাজ শুরু হয়েছে সকাল সাড়ে ১১টায়। আপাতত সুপার সপার দিয়ে পিচ কাভারের ওপর জমে থাকা পানি শুষে নেওয়ার কাজ চলছে। রিজার্ভ আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা পর্যবেক্ষণ করছেন মাঠ শুকানোর প্রক্রিয়া।
রোদের দেখা
সকাল ১১টার দিকে অনেকটাই থেমে গেছে বৃষ্টি। সোয়া ১১টার দিকে মেঘের আড়াল থেকে রোদের ঝিলিকও দেখা গেল কিছুটা। আকাশের বেশির ভাগটা যদিও কালো মেঘে ঢাকা। মাঠের কাভার সরানোর মতো অবস্থাও হয়নি এখনও।
আফগানিস্তান দল মাঠে চলে এসেছে সকালেই। তবে বাংলাদেশ দল রয়ে গেছে হোটেলে। দুপুর ১২টার দিকে তাদের আসার কথা মাঠে।
চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান মজা করে বলেছিলেন, বৃষ্টি বাঁচাতে পারে তাদেরকে। বাংলাদেশের জন্য সত্যিই আশার বার্তা নিয়ে শুরু হয়েছে শেষ দিনের সকাল। চট্টগ্রামের আকাশ ভেঙে নেমেছে বৃষ্টি।
আগের দিন রাত থেকেই শুরু হয়েছে প্রবল বৃষ্টি। সোমবার সকাল থেকেও চলছে টানা। উইকেট ও চারপাশ ঢেকে রাখা হয়েছে। মাঠের নানা জায়গায় পানি জমে আছে।
এই মাঠের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা অবশ্য দারুণ। বৃষ্টি থামার পর শুকাতে খুব বেশি সময় লাগে না। কিন্তু আকাশ যেভাবে ঘন কালো মেঘে ঢাকা, সহসা বৃষ্টি থামার ইঙ্গিত নেই।
৩৯৮ রানের প্রায় অসম্ভব লক্ষ্যের পেছনে ছুটে বাংলাদেশ কোনো লড়াই গড়তেও পারেনি চতুর্থ দিনে। ৬ উইকেটে ১৩৬ রান নিয়ে শেষ করেছিল দিন। আফগানরা তাই জয়ের দুয়ারে।
কিন্তু টেস্ট জুড়ে অসাধারণ পারফর্ম করেও আফগানরা এখন অপেক্ষায় শঙ্কা আর উৎকণ্ঠা নিয়ে । স্মরণীয় এক জয় থেকে নবীন টেস্ট দলটিকে বঞ্চিত করতে পারে বৃষ্টি।