দুর্নীতিবাজ নেতাদের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে অভিযানে নামছে দুদক

CPLUSTV
CTG NEWS
CPLUSTV
শেয়ার করুন

ক্ষমতাসীন দলের দুর্নীতিবাজ নেতাদের অবৈধ সম্পদ খুঁজে বের করতে অনুসন্ধানে অভিযানে নামছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ।এ লক্ষ্যে একজন পরিচালকের নেতৃত্বে একটি টিম গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

দুদকের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সরকারী দলের যেসব নেতা ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতি করে অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন, তাদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে। সেই তালিকা অনুযায়ী অভিযান শুরু করবে দুদক।

এ প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, দলের পদে থেকে যারা অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামব। দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে এই অনুসন্ধান হবে। অবৈধ সম্পদ দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধ। আমরা দেখব যাদের টাকা বের হচ্ছে, সেই টাকা লিগ্যাল সোর্সে অর্জিত কি না

সূত্র জানা, গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ফকিরাপুলস্থ ‘ইয়ংমেন্স ক্লাব’র অভিযান চালায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র‌্যাব)। এর পরপরই সন্ধ্যায় গুলশান-২ নম্বরে অবস্থিত নিজ বাসা থেকে যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভুইয়াকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। তার বাসায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ পিস্তল, গুলি, ৫৮৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি তার মালিকানাধীন ফকিরাপুল ইয়ংমেন্স ক্লাব থেকে নারী-পুরুষসহ ১৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। নগদ ২০ লাখ টাকার বেশি উদ্ধার করা হয়। কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তিনটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আকস্মিক অভিযানের ধারাবাহিকতায় শুক্রবার দুপুরে গ্রেফতার করা হয় নারায়ণগঞ্জ যুবলীগের সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়া শামীমকে। র‌্যাব থেকে জানানো হয়, ২০ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টায় নিকেতনে নিজ ব্যবসায়িক কার্যালয় থেকে গ্রেফতার করা হয় শামীমকে। অভিযানকালে শামীমের কার্যালয় থেকে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকাসহ ১৬৫ কোটি টাকার ওপরে এফডিআর (স্থায়ী আমানত)র ডকুমেন্ট উদ্ধার হয়। এ ছাড়া মার্কিন ডলার, সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার, মাদক ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। শনিবার দুপুরে তাকে ঢাকা মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।

রাজধানীর স্পোর্টস ক্লাবগুলোতে খেলাধুলার পরিবর্তে অবৈধ ক্যাসিনো চলছে- এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত কয়েক দিনে রাজধানীর ক্লাবগুলোতে অভিযান চালায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এ সময় গ্রেফতার করা হয় সরকারদলীয় কয়েকজন রাজনীতিককে। গ্রেফতারের পরপরই অর্থ-বিত্ত নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে। ক্যাসিনো জুয়া থেকে প্রাপ্ত অর্থ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি লব্ধ অর্থ এবং সেই অর্থে বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ করেন তারা। অবৈধ উপায়ে অর্জিত অপরাধ লব্ধ অর্থ থেকে কে কে ভাগ পায় সেই তথ্যও প্রকাশ পায়। কোটি কোটি টাকা দেশের বাইরে পাচার, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে সেকেন্ড হোম তৈরির তথ্যও প্রকাশ পায় সংবাদ মাধ্যমে।

দুদক এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য সংগ্রহ করছে বলে জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী অভিযাসে যারা গ্রেফতার হয়েছেন তাদের অঢেল টাকার উৎস খতিয়ে দেখা হচ্ছে।