ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীসহ ৭ জন মেয়র প্রার্থীরই মনোনয়নই বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরই একইসঙ্গে জনগণের কাছে ভোট চান দক্ষিণের হেভিওয়েট দুই প্রার্থী তাপস ও ইশরাক।
তবে উত্তরের ৭ প্রার্থীর মধ্যে অবৈধ হয়েছেন জাতীয় পার্টির মেয়রপ্রার্থী জিএম কামরুল ইসলাম। বাকি ৬ জনকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
নির্বাচন যেন সংঘর্ষে রূপ না নেয় সেদিকে খেয়াল রাখতে প্রার্থীদের আহ্বান জানিয়ে নির্বাচন কর্মকর্তারা বলেন, আচরণবিধি না মানলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নির্বাচনী লড়াইয়ে টিকে থাকার চূড়ান্ত অনুমোদন পর্ব মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ের দিন বৃহস্পতিবার (০২ জানুয়ারি) সকাল থেকেই প্রার্থী আর সমর্থকদের পদচারণায় মুখর ছিল ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়। নির্বাচনে লড়াইয়ে এই আবহে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সৌহার্দ্যময় উষ্ণতা দিয়েছে ভিন্ন আমেজ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে লড়ার বৈধতা পেয়েছেন সব মেয়র প্রার্থীই। পরে একসঙ্গে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তারা অঙ্গীকার করেন আচরণবিধি মেনে চলার। পাশাপাশি ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের অনুরোধ ছিলো হেভিওয়েট দুই প্রার্থীর মুখে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, যদি তীব্র শীতও থাকে, আমি আপনাদের কাছে আহ্বান করবো, ভোরবেলা থেকেই আপনারা ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দিয়ে আপনাদের সেবককে আপনারা নির্বাচিত করবেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন বলেন, ভোট দিতে আসবেন, এটি আপনাদের অধিকার। আপনাদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে আপনাদের আগামী জনপ্রতিনিধিকে নির্বাচিত করবেন।
এদিকে ঢাকা উত্তরে সিটি করপোরেশন এলাকার ভোটার না হওয়ায় বাতিল হয় জাতীয় পার্টির প্রার্থীর মনোনয়ন। আর বড় দুই দলসহ বাকি ৬ মেয়র প্রার্থীই পান মনোনয়নের বৈধতা।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেন, আমি আশাবাদী যে আগামি দিনগুলোতে সংলাপের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন আমাদের যে অভিযোগগুলি ইতিমধ্যে রেখেছি সেগুলোকে একটা সমাধানের দিকে এগিয়ে নিতে চেষ্টা করবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বলেন, নৌকা উন্নয়নের ধারাবাহিকতা দিয়েছে, এটা বজায় রাখতে গেলে, বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত করে বিশ্বের দরবারে পরিচিত করতে গেলে নৌকার কোনো বিকল্প নাই।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন বাতিল হওয়া মেয়র প্রার্থী জিএম কামরুল ইসলাম বলেন, আমি আইনি প্রক্রিয়ায় যাবো।
অন্যদিকে, নির্বাচনী লড়াইয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়ে সবার সমান সুযোগ নিশ্চিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আর্জি জানান কাউন্সিলর প্রাথীরা।
তারা বলেন, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই যেন সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারেন, অংশগ্রহণমূলক ভোট যাতে হয়, সেটাই আমাদের চাওয়া।
এদিকে, নির্বাচনের উৎসব সংঘর্ষে যাতে পরিণত না হয়, সেজন্য প্রার্থীদের আচরণবিধি মেনে চলার তাগিদ দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবুল কাসেম।
তিনি বলেন, নির্বাচন হবে ফেস্টিভ মুডে, আনন্দঘন পরিবেশে। আনন্দ যাতে সংঘর্ষে রূপ না নেয় এজন্য আমরা প্রার্থীদের বলেছি নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতে।
কাউন্সিলর পদে ঢাকা উত্তরে ১৫ ও দক্ষিণে ২৬ জনের প্রার্থীতা বাতিল হয়। আর সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে দুই সিটির ৪ জনের প্রার্থীতা বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। মনোনয়ন হারানো প্রার্থীরা ৩ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন ঢাকা বিভাগীয় কর্মকর্তার কাছে।