চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভার অনলাইন ভিত্তিক একমাত্র স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘দোহাজারী ব্লাড ব্যাংক’ এর প্রতিটা সদস্য আর্তমানবতার সেবায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশপ্রেম অন্তরে ধারণ করে সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনা করছে নিয়মিত।
“মুমূর্ষু রোগীর প্রেমিক যারা, স্বেচ্ছায় রক্তদান করে তারা” এই শ্লোগানে ২০১৬ সালের ২৬ জুন সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে নিজেরা রক্তদানের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহায়তায় মানুষকে স্বেচ্ছায় রক্তদানে উৎসাহিত করছে সংগঠনটির সদস্যরা। চন্দনাইশ, সাতকানিয়া ও পটিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচির মাধ্যমে সরেজমিনেও চলে তাদের প্রচারণা। রক্তদান সংশ্লিষ্ট সংগঠন হলেও সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে সংগঠনের সদস্যদের অংশগ্রহণে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি, মহাসড়কে জেব্রা ক্রসিং অঙ্কণ, শীতার্তদের শীতবস্ত্র বিতরণ সহ জনহিতকর নানা কর্মসূচি পরিচালিত হয় বছর জুড়ে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র, চাকুরীজিবী, ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার সদস্যদের মাসিক চাঁদা ও আর্থিক অনুদানে সংগঠনটির সকল কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ফেইসবুক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে তথ্য আদান প্রদান করে রক্তদাতা যোগাড় করেন সংগঠনটির সদস্যরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে সংগঠনটির পাবলিক গ্রুপের মেম্বার বর্তমানে ২৯ হাজার, রয়েছে পাবলিক পেজ। এছাড়া টুইটার, লিঙ্কডইন, ইনস্ট্রাগ্রাম, ইউটিউব সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহযোগিতায় রক্তদানের উপকারিতা বিষয়ে সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে সংগঠনটি। সংগঠনটির এডমিন মাইনুদ্দীন হাসান বলেন, “একব্যাগ রক্ত কতটা মূল্যবান এটা শুধু ভুক্তভোগীরাই জানেন। আমরা প্রায় প্রতিদিন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রক্তের জন্য হাহাকার দেখি। যেখানে কোন মুমূর্ষু রোগী জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রক্তের প্রয়োজন অনুভব করে সেখানেই বেঁচে থাকার আলোকবর্তিকা হাতে ছুটে যান সংগঠনের সদস্যরা। স্বেচ্ছায় রক্ত সংগ্রহ করে দিয়ে মুমূর্ষু রোগীদের প্রাণ বাঁচানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন সংগঠনের সদস্যরা।’
সংগঠনটির আরেক এডমিন এস.এম ওয়াহিদ রনি বলেন, মানব সেবাই হলো বড় সেবা। আমাদের সংগঠন থেকে সর্বদা চেষ্টা করি, অন্যের বিপদে পাশে দাঁড়ানোর। ‘দোহাজারী ব্লাড ব্যাংক’ সদস্যরা প্রায় প্রতিদিন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে স্বেচ্ছায় রক্ত সংগ্রহ করে দিয়ে মুমূর্ষু রোগীদের প্রাণ বাঁচানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। পাশাপাশি সুস্থ্য-সবল ও রক্তদানে সক্ষম ব্যক্তিদের রক্তদানে উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচি পরিচালিত করে নতুন রক্তদাতা সংগ্রহের প্রচেষ্টা চালানো হয়। সংগঠন পরিচালনা ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সংগঠনে চারটি স্তর রয়েছে। এডমিন, কার্যকরী পরিষদ, সহ-কার্যকরী পরিষদ ও শুভাকাঙ্ক্ষী পরিষদের মতামতের ভিত্তিতে সংগঠনের উদ্যোগে যাবতীয় কর্মকান্ড পরিচালিত হয়। সামাজিক ও মানবিক কাজে বিশেষ অবদান রাখান স্বীকৃতি স্বরূপ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ‘দোহাজারী ব্লাড ব্যাংক’ সম্মাননা স্মারক অর্জন করেছে উল্লেখ করে সংগঠনটির এডমিন রাশেদুল ইসলাম বলেন, “সম্মাননা, প্রতিদান কিংবা মানুষের প্রশংসা পাওয়ার জন্য নয়, মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করছেন তারা। ভবিষ্যতে আরো ব্যাপকভাবে সমাজ কল্যাণমূলক কাজ করা হবে।”