স্ত্রীর পরকীয়া সইতে না পেরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করা চট্টগ্রামের তরুণ চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশের স্ত্রী তানজিলা হক চৌধুরী মিতুকে (২৭) দেয়া হাইকোর্টের জামিন আদেশ বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।
এর আগে বুধবার (২৮ আগস্ট) মিতুর জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন আদেশ দেন।
উল্লেখ্য বহুল আলোচিত এই মামলায় ৩১ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে নগরের নন্দনকানন এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় মৃত ডাঃ আকাশের স্ত্রী ডাঃ মিতুকে। হাইকোর্টে জামিন পাওয়ার পরে রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলির জামিন স্থগিতের আবেদন করে আপিল বিভাগে। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন নাকচ করে দিয়ে মিতুর জামিন বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। আজ বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে ‘নো-অর্ডার’ বলে আদেশ দেন আদালত। ডা. মিতুকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছিল রাষ্ট্রপক্ষ। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার একটি বাসায় মোস্তফা মোরশেদ আকাশ ইনজেকশনের মাধ্যমে শিরায় বিষ প্রয়োগে আত্মহত্যা করেন। এর আগে, অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক থাকাকে কেন্দ্র করে আকাশ ও তার স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
এক পর্যায়ে ভোর ৪টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে বাবার বাড়ি চলে যান মিতু। পরে স্ত্রীর সমালোচনা করে মিতুর স্বামী মোস্তফা মোরশেদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘আমাদের দেশের ভালোবাসায় চিটিংয়ের শাস্তি নেই, তাই আমিই বিচার করলাম আর আমি চিরশান্তির পথ বেছে নিলাম।’
আলোচিত এই আত্মহত্যার পর আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে ডা. আকাশের স্ত্রী, শ্যালিকা, দুই বন্ধুসহ ছয়জনকে আসামি করে ১ ফেব্রুয়ারি চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন আকাশের মা জোবেদা খানম। এ মামলায় ওইদিন রাতেই রাতে পুলিশ নগরের নন্দনকানন এলাকায় এক আত্মীয়ের বাসা থেকে ডা. মিতু আটক করে। ডাঃ আকাশ হত্যা মামলায় চট্টগ্রামের আদালতে জামিনের আবেদন করলে আদালত তা খারিজ করে। এরপর হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন ডা. মিতু। জামিন শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেন। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে মিতুর জামিন মঞ্জুর করে গত ২৮ আগষ্ট রায় দেন হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য ২০০৯ সাল থেকে আকাশের সঙ্গে মিতুর প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। এরপর ২০১৬ সালে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।